Saturday, December 23, 2017

দ্বিধা

বেকার বকবক # ৮


রাষ্ট্রভাষা নিয়ে আমার নড়বড়তা ঘনিষ্ঠ মহলে আমাকে একটু খ্যাতিই এনে দিয়েছে বলা যায়।  অপমানিত হয়েছি, হাসির পাত্র হয়েছি , কিন্তু থেমে থাকিনি।  গটমটিয়ে নড়বড় করে হেঁটে গেছি।  মনে কি দ্বিধা রেখে চলে যাবার পাত্র আমি নই। হিন্দী বলার ব্যাপারে আমার policy হল , দ্বিধা আমার নয় , দ্বিধা তোমার।  অর্থাৎ যা দ্বিধা করার করবেন, করেছেন ও করেন শ্রোতা , আমি যা বলার বলে যাই, না ভেবে ।  আর ভাববই বা কেন , সে যদি বুঝতে পারে তাহলে সমস্যাটা কি ? After all ভাষা হল ভাব প্রকাশের মাধ্যম। এই তো বছর দুই আগে দিল্লী আগ্রা জয়পুর বেড়াতে গিয়ে হিমাচলবাসী এক driver এর সাথে প্রায় সাতদিন fluent হিন্দীতে বাতচিত করে এলাম। হিন্দী ভাষায় আমার দেওয়া instruction follow করেই বেচারাকে সব জায়গায় যেতে হয়েছে।  কিন্তু কোনসময় বিব্রত হতে দেখিনি , বরং সবসময় হাসিখুশীই থাকতে দেখেছি , একটু বেশীই হাসিখুশী।  শুধু একবার মনে হয়েছিল একটু দ্বিধা করছে।  শেষ দিন হোটেলে ফেরার সময় বলেছিলাম “হামকো hotel মে ফেক দো “. শুনে কিছুক্ষন চুপ করে রইল।  গাড়িতে বাকি আর যাঁরা ছিলেন তারা প্রথমে একটু হেসে পরে টেনশন করছিলেন কি হয় কি হয়।  হয় নি কিছু, অক্ষত অবস্থায় হোটেলে পৌঁছেছিলাম।  

Sunday, December 17, 2017

“সমান্তরাল” - A Review


পার্থ চক্রবর্তীর ছবি “সমান্তরাল” সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অপরাজিত আঢ্য , তনুশ্রী চক্রবর্তী,  পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের মতো অভিনেতাদের পেয়েছে।  তাঁরা তাদের অভিনয় কুশলতার পরিচয় ও রেখেছেন এ ছবিতে। এছাড়াও  ঋদ্ধি , কুশল , সুরঙ্গনা , অনিন্দ্য ও আছেন।  ওঁরাও ভাল অভিনয় করেছেন।  কিন্তু script আর direction এ ছবিকে ছড়িয়ে ছত্রিশ করে রেখে দিয়েছে।  Film review লিখতে গিয়ে গল্প বলে দেওয়ার মতো গর্হিত কাজ আমি করবো না।  কিন্তু আশা করেছিলাম চিত্রনাট্যকার আর পরিচালক গল্পটা ঠিকঠাক বলবেন।  দুর্ভাগ্যবঃশত তাঁরা সেই কাজটি করতে পারেন নি।  বরং বড় কাঁচা কাজ করেছেন।  কোন script এর basic উপাদান হল কাহিনীকে ঠিক ভাবে সাজানো , ভাল storytelling এর কথা তো ছেড়েই দিলাম।  একজন চরিত্রকে যেভাবে develop করা হল  হঠাৎ film এর মাঝে তিনি সম্পূর্ণ অন্যরকম behave করতে শুরু করলেন , যে মূল চরিত্র তার ঠিকঠাক developement ই হল না , এগুলো অমার্জনীয় অপরাধ।  কোন professional লেখক ও পরিচালকের কাছে এ আমি আশা করি না।  ছবির নাম সমান্তরাল হলেও ছবিটি screenplay ও storytelling র জ্যামিতিক অবস্থান থেকে সম্পূর্ণ ভাবে চ্যুত। অহেতুক ও অপ্রাসঙ্গিক গান , যেখানে জোর দেওয়া দরকার সেখানে জোর না দিয়ে ছবির এ অগুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সময় নষ্ট , আরও কত কি ।  বলে যাওয়া যায় অনেক কিছু।  

ছবির বিষয় নিয়ে অনেকে বলতে পারেন কি দেখিলাম , কিন্তু honestly আমার কাছে ওটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।  বিষয়টা নিশ্চয়ই গুরুত্বপূর্ণ , কিন্তু আজকের যুগে awareness অনেক বেশী , আজ থেকে কুড়ি বছর আগে এই বিষয়টা হয়ত eye opener হতে পারতো , কিন্তু এখন নয়। 
আমি যখন কোন ছবি দেখি তখন তার শিল্পমানটাই  আমার কাছে important , সে যে বিষয়ই হোক বা যে কাহিনীই হোক।  সেই পরিপ্রেক্ষিতে “সমান্তরাল” এমন একটা ছবি যা আমি কাউকে দেখতে বলতে পারব না।  আরো একটা বাংলা ছবি যেখানে promotion এ বেশি খরচ করা হয়েছে script developement এ না করে।  দুর্ভাগ্যজনক।  

Saturday, December 16, 2017

Missed Call




বেকার বকবক # ৭


উড়ালপুল আর mobile এর tower তখন কলকাতাকে ছেয়ে ফেলছে। এরকম সময় প্রায় বছর পাঁচেক পর কলকাতা গেছি। Land করার ঠিক পরদিন আমার এক বন্ধু বলল “পার্কস্ট্রিট এর মোড়ে পৌঁছে আমায় একটা missed call দিয়ে দিস”। আমি তো আমেরিকা থেকে গেছি, আনাড়ি আনপড় , তার ওপর jet lagged . কিছু না বুঝে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলাম। মনে পড়ল ছোটবেলায় আমার মফস্বল শহর থেকে প্রথমবার কলকাতা বেড়াতে গিয়ে টেলিফোনের শ্ৰাদ্ধ দেখেছিলাম ।  টেলিফোন ভবনের সামনে রীতিমতো সামিয়ানা খাটিয়ে একটা গাবদা টেলিফোনকে মঞ্চে বসিয়ে এক বয়স্ক শ্রদ্ধেয় পুরোহিত মশাই মাইকে উচ্চস্বরে মন্ত্র বলে সুচারু ভাবে সেই শ্ৰাদ্ধ সম্পন্ন করেছিলেন।  টেলিফোন যেহেতু কলকাতায় প্রায় কাজ করত না তার প্রতিবাদ স্বরূপ “Calcutta Telephones” কে কটাক্ষ করে ওরকম শ্রাদ্ধ নাকি প্রায়ই করতেন তৎকালীন activist রা। ওই প্রথম আমি জানতে পারি যে টেলিফোন ধর্মে  হিন্দু  আর  activist-রাও  রসিক ।  

Saturday, December 9, 2017

Typo

বেকার বকবক # ৬


KG তে স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য তখন নতুন নতুন Oral পরীক্ষা শুরু হয়েছে।  আমার এক বন্ধুর বাবার সাথে আমাকে সেই কঠিন Oral পরীক্ষা দিতে পাঠিয়েছিলেন আমার বাবা মা।  হয়ত নিজের চোখের সামনে ছেলের ধ্যারানো মেনে নিতে কষ্ট হবে ভেবেই।  কিন্তু আমি অত্যন্ত সাফল্যের সাথে এক দানেই সেই পরীক্ষা উৎরে যাই। কারন পরীক্ষায় প্রশ্ন খুব সহজ এসেছিল।  আমাকে প্রশ্ন করা হল “ তোমার কান কোথায় দেখাও তো ? “ আমি খুব তৎপরতার সাথে দু হাত দিয়ে আমার দুকান দেখিয়ে দিই।  তাই দেখে পরীক্ষক তার পাশে বসা আরেকজনের দিকে প্রীত হেসে যেভাবে তাকালেন তার মানে , এ ছেলেটি পারবে।  পরে বুঝেছি কি পারার কথা ওরা ভেবেছিলেন। আমি যে স্কুলে পড়তাম সেখানে কানের এক বিশাল ভূমিকা ছিল।  কারন সারাক্ষণই কানধরে দাঁড়াও  বা কানধরে ওঠবোস কর এই main instruction ই আমায় follow করতে হোত। উঁচু ক্লাসে ওঠার সাথে সাথে মূলত বানান ভুলের জন্যই বেশীরভাগ সময় কান কোথায় প্রশ্নটার উত্তর কাজে আসত। সুতরাং সারা স্কুল জীবন ও পরবর্তী জীবন বানান ঠিক লেখার টেনশনে কেটেছে আমার।  

Tuesday, December 5, 2017

কান্না

বেকার বকবক # ৫


মাঝরাতে তোমার কান্নার শব্দে  ঘুম ভেঙে উঠে মাথার কাছে জানলা খুলে ঝাপসা চোখে তুমুল বৃষ্টি দেখলাম কিছুক্ষন।  ঝমঝমিয়ে আকাশ ভাঙা বৃষ্টি।  অথচ গত কদিন ছিল শুধু মেঘের আনাগোনা।  মেঘের ওপর মেঘ , তার ওপর আরও মেঘ।  থমথমে , নিশ্চুপ , অন্ধকার মাখা।  বালক মেঘ, বালিকা মেঘ , ছোকরা , বৃদ্ধ , সাদা , কালো , পুরুষ ও নারী মেঘ।  সবাই যন্ত্রনায় নীল , বুকের মধ্যে জমিয়ে রাখা ক্ষোভ , কষ্ট , দুঃখ নিয়ে নড়ছে না চড়ছে  না কতগুলো মেঘ।  কেউ দেখছে না ওদের , কেউ পাত্তা দিচ্ছে না।  ব্যাস্ত “don’t care” দিন হুড়মুড় করে এগোচ্ছে নিজের কাজে।  অফিসের কাজ , বাড়ির কাজ , স্কুল , পার্টি , নিছক আড্ডা , বিনোদন , হাসি , অভিনয় নিয়ে  মুখোশ পরা  দিন গড়িয়ে চলেছে। আর সবার অগোচরে জমছিল মেঘ । ওরা আসছিল দূর দূর থেকে।  Social Network এ  হাসি হাসি selfie , সুখের সব  মুহূর্ত, যাবতীয় ভাল থাকাথাকি সরে সরে যাচ্ছে ক্রমাগত।  

Saturday, December 2, 2017

“Lady Bird” - A Review


এই সময় , যখন film industry অতিমানবীয় চরিত্র, কল্পবিজ্ঞান বা কষ্টকল্পিত thriller এর হাত ধরে revenue stream ঠিক রাখতে লড়ে যাচ্ছে , কোটি কোটি ডলার বাজেটে visual effects আর চমক লাগানো ছবি তৈরী করে দর্শকদের ধরে রাখার চেষ্টা করে চলেছে আর আমরা দর্শকরা ঘুরে ফিরে একই ধরনের ছবি দেখে দেখে ক্লান্ত তখন Greta Gerwig এর “Lady Bird”  American Film Industry তে খোলা হাওয়া।  

শেষ কোন হলিউড ফিল্ম দেখেছেন যা সাধারণ মানুষের গল্প বলেছে ? আমার মনে পড়ছে না। সেরকম ছবি নাকি বিক্রী হয় না , সাধারণ মানুষের জীবনে যেন drama নেই , নেই অভিনবত্ব।  এরকম যাঁরা ভাবেন তাদের স্তম্ভিত হতে হবে “Lady Bird” দেখে , কারন “Lady Bird” middle class American জীবনের ছবি।  আর তা শুধু নয় , কোন ফিল্মিক অতিরঞ্জন ছাড়া সাদামাঠা মানুষের কাহিনী।  আর তা সম্ভব হয়েছে Greta Gerwig এর অসাধারন চিত্রনাট্য আর অভিনেতাদের অনবদ্য অভিনয়ের জোরে।  

Thursday, November 30, 2017

সম্পর্ক

বেকার বকবক # ৪


কিছুদিন হল এক মহিলার  সাথে একটা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছি আমি ।  কিছুদিন বলা ভুল হবে  , কিছু বছর ।  প্রায় বছর সাতেক।  Los Angeles এ বেড়াতে গেছিলাম।  তখনই প্রথম আলাপ।  প্রথম আলাপেই ভাল লাগা , আর তারপর একসাথে পথচলা।  দিন গেছে আর আমার বিশ্বাস বেড়েছে ওর ওপর।  ভাল লাগাও তরতর করে এগিয়েছে।  অনেকবার একসাথে long drive এ গেছি আমরা।  কম দূরত্বেও আমার পাশে থেকেছে ও , আর আমাদের মধ্যে দূরত্ব কমেছে। সব ঠিকঠাকই চলছিল, তারপর একদিন আচানক , ওই যা হয় আর কি।   যাঁরা San Francisco Bay Area য় থাকেন তাঁরা Vasco Road চেনেন। একবার ওদিকে কোথাও একটা যাওয়ার সময় highway ছেড়ে আমার ইচ্ছে করল Vasco Road দিয়ে যেতে।   পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে আঁকাবাঁকা পথ চলে গেছে জনবসতি কে দূরে রেখে।  তার মাঝে সারে সারে windmill . হাওয়ার বেগের সাথে তাল রেখে ঘুরে চলেছে প্রকাণ্ড windmill গুলো , আবার কখনও থমকে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে।  ওদের মধ্যে দিয়ে নেড়া পাহাড়গুলোর সাথে লুকোচুরি খেলতে খেলতে আমি গাড়ি চালাচ্ছি। কিন্তু ওর সেটা ঠিক পছন্দ হল না. দেরী হয়ে যাচ্ছে যে।  বিকেলের রোদ এক পাহাড় থেকে অন্য্ পাহাড়ে লাফিয়ে লাফিয়ে চু কিতকিত খেলছে।  ভীষণ ভাল লাগছে আমার।  কিন্তু ওর মুখ গোমড়া।  প্রথমে কিছুক্ষন “ওই দিক দিয়ে গেলে হয় না” বলেছিল বার বার , তারপর চুপ করে গেল।  অভিমান।  চুপ করে বসে রইল আমার পাশে, শেষ অবধি।  ওই প্রথমবার একটু মনোমালিন্য বলা যায়।  মাঝেমাঝে হয় এখনও , কারন আমার তো সবসময় নিয়মের পথে চলতে ইচ্ছে করে না , কি করব বলুন ।  তবু  আমরা একসাথেই আছি , পাশাপাশি।   অফিস যাওয়ার সময়ও পাশে থাকে , বেড়াতে গেলেও , অচেনা কোথাও গেলে তো থাকেই। 

Friday, November 24, 2017

ঝরা পাতা






বেকার বকবক # ৩


আমাদের  একটা সাদা রঙের কুকুর ছানা আছে।  একটা কালো টুপি পড়ে  তাকে নিয়ে সকাল বিকেল হাঁটা আমার কাজ।  যে পথ দিয়ে হাঁটি সেখানে একটা সবুজ মাঠের ধার দিয়ে সাড় বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকে কতগুলো গাছ।   অনেকরকমের গাছ। কি নাম তাদের জানি না। হেঁটে যাই আর গাছগুলো বিকারহীন মুখে দাঁড়িয়ে থাকে। হয়ত এভাবেই  দাঁড়িয়ে আছে, অনেক বছর ধরে।  বেশ কয়েকমাস হল হাঁটছি , কিন্তু এতদিন  হাঁটার সময় সেভাবে ওই গাছগুলোকে দেখিনি। গত সপ্তাহ দুয়েক ওই গাছগুলো কেমন যেন চোখে পড়ছে।  এতদিন ওরা সবাই সবুজ ছিল , আজকাল ওরা রঙ বদলেছে।  কেউ হলুদ, কেউ লাল , কেউ তামাটে আবার কেউ কেউ এখনো ঘন সবুজ।  হাঁটার সময় আমাদের ওপরেই ঝরে পরে পাতা।  ওই সব বিভিন্ন রঙের পাতা।  রাস্তাটা ভরে থাকে ঝরা পাতায়।  আর ওই পাতা মাড়িয়ে আমি হেঁটে যাই।  একদিন একটা ছবিও তুলেছিলাম , কি জানি হয়ত দুটো।  মাঝে মাঝে খুব ভাল লাগে। একটা করে  দিন যায় , আরও পাতা ঝরে পরে।  রাস্তাটা আর দেখা যায় না , শুধু নানারঙের প্রাণহীন শুকনো পাতা।  হাঁটি , নিয়ম মাফিক।  হাঁটতে হাঁটতে ভাবি আবার অনেকসময় কিছুই ভাবি না।  ভাবার কি আছে ? এটাই তো নিয়ম , সবাই যখন শুধুই  মানুষ সবাই সমান , আর যখন নানা রঙের মানুষ , তখনই  তো ঝরে পরা।  Civilization এর ইতিহাসই তো তাই , রঙ যখন প্রকট তখনই  fall , মানে পতন।  

Sunday, November 19, 2017

Turkey Day

বেকার বকবক # ২

আমার অফিসে প্রত্যেক বছর এই নভেম্বরের শেষে কতগুলো turkey চাকরির খোঁজে আসে। 
San Ramon এর একটা ছোট পাহাড় থেকে নেমে আসে কর্পোরেটের আঙিনায়।  কেন কিভাবে কে জানে , তবু আসে।  চার পাঁচজনের দল ঘুরতে থাকে এ দরজা থেকে ও দরজা। কোন কোন দিন আরও অনেক বড় দল।  পাহাড়গুলো বৃষ্টি ভিজে এখন ঘন সবুজ।  মাঝে মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা গাছগুলো রঙ মেখে বসে আছে।  একটা নীল আকাশ ছুঁয়ে যাচ্ছে ওদের। ঝকমকে রোদের দিনে খুব সুন্দর লাগে পাহাড় গুলোকে।  আবার যেদিন  মেঘ মেখে বসে থাকে সেদিন  খুব মন কেমন করে।  ওই সুন্দর গড়িয়ে আসা পাহাড়ের গায়ে যে পাখিগুলোর বাস ওরা যে কেন আসে কর্পোরেটের দরজায় বুঝি না।  বেশ তো ছিলি, রোদ মেখে  ঘুরে বেড়াচ্ছিলি কিংবা বৃষ্টি  ভিজে নেই-কাজ দিন গুজরাচ্ছিলি।  তোদের মতো কাজ নেই কর্ম নেই দায়িত্ব নেই দায় নেই জীবন পেলে আমরা তো বর্তে যেতাম।  সিগারেট ব্রেক এ আমার সাথে মূলত মোলাকাৎ ওদের  (Cigerette Smoking is injurious to health , সিগারেট কর্কট রোগের কারন এবং কর্কট মৃত্যুর কারন ইত্যাদি ইত্যাদি ). সেখানেই যা কিছু কথোপকথন।  যদিও কোনদিনই কোন উত্তর পাই নি।  Automated দরজার সামনে রোজ এসে দাঁড়াবে , কিন্তু কোনদিন ভেতরে ঢুকতে পারে না , আমি অন্তত দেখিনি।  সবাই দেখে , ছবি তোলে , টেক্সট করে বন্ধুদের বা social network এ পাঠায়।  Like ও পায় নিশ্চই অনেক , কিন্তু ওরা চাকরি পায় না।  সেদিন আমার সিগারেট প্রায় শেষ , তখন একটা Turkey আমার খুব কাছে চলে এল।  ভাবছি পিছু হটব না কি , তখন হঠাৎ ওর চোখে চোখ পড়ল।  বড্ড মায়াবী একটা চোখ , অনেক কিছু লেখা আছে তাতে।  আমি কি ছাই জানি নাকি সে চোখের ভাষা।  তবু তাকালাম।  ওর চোখে চোখ রেখে।  হঠাৎ মনে হল খুব বিপদে পড়েই ও চাকরির খোঁজে এসেছে।  চাকরিটা না পেলে হয়ত ওর জীবন সংশয়।  কি জানি ? উল্টো পাল্টা কি ভাবছি ভেবে সিগারেটটা  নিভিয়ে ফিরে গেলাম আমার অফিসে।  Elevator যখন 4th আর 5th floor এর মাঝামাঝি , হঠাৎ মনে হল আমারও  তো Turkey Day যে কোন দিন আসতে পারে যদি কোন বন্দুকধারী  মানসিক উম্মাদ কেড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়  আমার বাঁচার অধিকার ?

“ডুব” - A Review


হল থেকে বেরোনোর সাথে সাথে একজন জানতে চাইলেন কেমন লাগল ছবিটা। সরাসরি কোন উত্তর দিতে পারলাম না। আমি খুব টগবগিয়ে কথা বলতে পারি না। কিন্তু তার থেকেও বড় কথা, এই ছবিটা কেমন ছবি সে কথার উত্তর এক কথায় ভাল বা মন্দ বললে ছবিটার প্রতি সুবিচার করা হয় না। মোস্তাফা সারোয়ার ফারুকি-র ছবি ‘ডুব’ human relationships এর ছবি। এই বিষয়টা দর্শককে সবসময়ই ভাবায় কারণ সম্পর্ক বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন স্তরে আমাদের ছুঁয়ে যায়, অবশ্যই যদি পরিচালক ঠিক ঠিক ভাবে সম্পর্কের সূক্ষ তার গুলোকে সুরে বাঁধতে পারেন। Drama ও melodrama র মধ্যে ব্যাবধান খুব সূক্ষ । ফারুকি সেই ব্যবধানটা বেশ মুনশিয়ানার সাথে টান টান রাখতে সফল হয়েছেন “ডুব”-এ যা খুবই শক্ত কাজ । আমার মতে ছবিটার সবচেয়ে বড় সাফল্য এখানেই।
চরিত্র মূলত চারটি। জাভেদ (ইরফান খান ), মায়া (রোকেয়া প্রাচী ), নিতু (পর্নো মিত্র ) এবং সাবেরী (নুসরত ইমরোজ তিশা) . প্রতিষ্ঠিত চিত্রপরিচালক জাভেদের স্ত্রী মায়া ও মেয়ে সাবেরী। নিতু সাবেরীর স্কুলের বন্ধু। জাভেদের সাথে নিতুর সম্পর্ক এবং তার জের কিভাবে এই চারটি চরিত্রকেই প্রভাবিত করেছে সেটাই ছবির মূল বিষয়। গল্পে নতুনত্ব কিছু নেই , তবে এরকম ঘটনা যে সম্পর্কের জটিলতা সৃষ্টি করে ফারুকি তাকেই ধরার চেষ্টা করেছেন খুব সংবেদনশীলতার সাথে।
অভিনেতারা সকলেই পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত। এবং তাদের অভিনয়ের নিজস্ব style আছে। যেভাবে চরিত্র গুলোকে দেখানো হয়েছে তাতে casting যথাযথ হয়েছে বলা যায়। সকলেই ভাল অভিনয় করেছেন , বিশেষ করে প্রাচী ও তিশা। নিতু-র চরিত্রটা আরেকটু ভালভাবে দাঁড় করানো উচিত ছিল। নিতুকে এ ছবির villain হিসেবে মনে হয়েছে , হয়ত সেটা ঠিক নয়। নিতু ও জাভেদের মধ্যে সম্পর্কটা আরেকটু real estate পেলে script টা আরো মজবুত হত বলে আমার ধারণা।
এ ছবির আরেকটা উল্লেখযোগ্য বিষয় হল visuals. অসম্ভব ভাল এবং বুদ্ধিদীপ্ত ক্যামেরার কাজ। Cinematographer শেখ রাজিবুল ইসলাম অনেকটা কৃতিত্ত্ব দাবী করেন নিঃসন্দেহে। Music ও ছবির বিষয় ও গতির সাথে মানানসই।
নিছক entertainment এর ওপরও যদি কিছু চান , এমন ছবি যা আপনাকে ভাবাবে বা ছুঁয়ে যাবে তবে “ডুব”-এ ডুব দিয়ে দেখুন , পস্তাবেন না।


Saturday, November 18, 2017

“Sonata” - A Review


সমস্যাটা হল information overload. একটা মুভি দেখতে যাওয়ার আগে আপনি কি করবেন ? একটু Google Search করে মুভিটার রিভিউ পড়বেন ? পন্ডিতেরা কি বলছে শুনবেন ? আর আজকাল তো promotion এর যুগ।  ছবি মুক্তি পাওয়ার আগেই এত ভাল এত ভাল বলে এমন শোরগোল শুরু হয়ে যায় যে মনে হয় ছবিটা না দেখলে জীবনই বৃথা। অথচ “Sonata”-র যতগুলো রিভিউ পড়েছি সবাই বলছে  প্রায় সময় নষ্ট। আমাদের এত ব্যস্ত জীবনে সময় নষ্ট করার সময় কোথায় ? তাও আবার হলে গিয়ে ছবি দেখে।  এদিকে অপর্না সেন এর ছবি।  তার ওপর শাবানা আজমী , লিলেট দুবে। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই , ওই একটা দিল্লী কা লাড্ডু টাইপের ছবি যা দেখলে পস্তাবো, না দেখলেও পস্তাবো এই ভেবে নিয়েই গেছিলাম “Sonata” দেখতে ।  

সবাই জানেন ছবিটা  Mahesh Elkunchwar এর মূল নাটক “Sonata” অবলম্বনে তৈরী।  অপর্না সেন মোটামুটি মূল নাটকটাকেই অপরিবর্তিত রেখেছেন।  আরেকটা কথা বলে দেওয়া বোধহয় ভাল , Elkunchwar হাতে গোনা এমন কয়েকজন মারাঠী নাট্যকারের অন্যতম যাঁরা কোনদিন populist ও commercial হাওয়ায় গা ভাসান নি।  

Thursday, November 16, 2017

ফেরা




বেকার বকবক # ১

লাল ব্রেকলাইটে ধাঁধিয়ে যাচ্ছে চোখ , দিন শেষের   ট্রাফিক এগোচ্ছে ধীর  গতিতে।  তবু এগোচ্ছে।  পাশাপাশি সব গাড়িতেই একা  একা  কিছু মানুষ , যে যার গন্তব্যে চলেছে শেষ আলোর রেশ নিয়ে।  ঝাপসা লাগছে সবাইকে।  শুধু খুব মনোযোগ দিয়ে কাজ করে চলেছে গাড়ির wiper.  পেরিয়ে গেলাম  Bernal , Castewood ও পেছনে পড়ে রইল।  এঁকে বেঁকে চলেছি Sunol grade এর দিকে।  আর তারপর Niles Canyon.  NPR এ 1.4 Trillion Dollar এর tax cut , Northern California shooting. Sunol এর ছোট ছোট পাহাড়ের বুকে মনকেমন করা ক্লান্ত মেঘ থমকে আছে। বাঁক নিয়ে চলা রাস্তা আরও মন্থর।  ভাল লাগছে না রেডিওর বকবক।  ঝিরঝিরে বৃষ্টি বাড়ছে আস্তে আস্তে।   দিনের শেষ আলোটুকু মুছে নিয়ে যাচ্ছে অন্ধকার।  রেডিওটা বন্ধ করে CD Player টা on করে দিলাম। গাড়ির জানলায় একটানা বৃষ্টির শব্দ। প্রায় অন্ধকারেও সোনালী পাতা নেড়ে হাসিখুশি কটা Fall Color মাখা গাছ।  দূরে কোথাও একটা siren বাজিয়ে চলে গেল emergency vehicle. GPS বলছে  আরও সাত  মাইল।  থমকে থাকা মেঘ গুলোও আর পারল না , হুড়মুড় করে বৃষ্টি হয়ে ঝরতে থাকল গাড়ির ওপরে।  অঝোর ধারায় বৃষ্টি।  অস্পষ্ট গাছ , বাড়ি , উল্টোদিক থেকে আসা গাড়ি সরে সরে যাচ্ছে, খুব দ্রুত ।  মনে হচ্ছে গাড়ির ভেতরই ভাল আছি , বাইরের পৃথিবীটা অচেনা একটা  জায়গা , যেখানে অনেক বিপদ , সংকট অপেক্ষা করে আছে।  তারপর চলতে চলতে , চলতে চলতে , পৌঁছে গেলাম , বাড়ি। তখন CD তে নীচুস্বরে সুমন চট্টোপাধ্যায় গাইছেন “আমরা শুধু এই আকালেও স্বপ্ন দেখি “।

Thursday, November 2, 2017

আত্মহনন


সকলেরই একটা বাঁধা পথ থাকে
সকলেরই থাকে একটা নৈহাটি লোকাল
সময় মিলিয়ে বেরিয়ে পড়া সকাল সকাল
দিন গেলে ফিরে যাওয়া সেই বাঁধা পথে ,
সকলেরই একটা বাঁধা পথ থাকে।

সকলেরই থাকে কিছু খুচরো অসুখ
বাঁধা পথে যেতে যেতে মন উশখুশ
সকলেরই থাকে স্বপ্ন , তুমুল রেল অবরোধ
ভেঙেচুরে দিনরাত অন্যদিন , আত্মবিরোধ
সকলেরই অন্যপথে টুকরো টুকরো সুখ।

Monday, October 23, 2017

নীরবতা


ছুঁয়ে আছি নীরবতা
ছুঁয়ে আছি শেষহীন রাত
যেখানেই যাস তুই
বুক ভরা জলপ্রপাত।

বেলা যায় একা একা
মেঘ জমে মেঘের ওপর
আঁকিবুকি ছেলেবেলা
পড়ে আছে শিশিরের ভোর।

Tuesday, October 17, 2017

কথা ছিল


কথা ছিল আশিনের রাতে
চাঁদ ছুঁলে শিশিরের বুক
হেঁটে যাব নিরিবিলি পথে ,
তুমি আমি , দুজনেই চুপ।

কথা ছিল আষাঢ় শ্রাবণ
এলোমেলো দিন জুড়ে তুমি,
কথা ছিল মেঘ মল্লারে
তুমি শুধু , তুমি তুমি তুমি।

Friday, October 13, 2017

বিজয়া


জানি তুই ফিরে যাবি একা
ফেলে রেখে বিষাদের ফুল
খেলা শেষে জানি অবহেলা
শুরু হলে শেষ , নির্ভুল।

জানি তুই ফেলে চলে যাবি
রয়ে যাবে দিন এলোমেলো
ভুলোমন , রাত মনখুশী
যাবার সময় বুঝি হল।

Monday, October 9, 2017

মন খারাপের সকাল


সকাল সকাল মন খারাপ
সকাল সকাল ওলট পালট সবকিছু
রোদের পারদ বাড়লে বাড়ুক
বৃষ্টি  ধারায় ভিজছে শুধু মনটুকু।

আসার শেষে যাওয়া থাকেই
তত্ত্ব কথায় মজছে কে ?
অবুঝ মনের  সকাল তোকে
চাইছে যেতে না দিতে।

Monday, October 2, 2017

দিনযাপন


তোমার বুকের ভেতর খুব সন্তর্পনে
ভোর হবো আমি , লাল আকাশে।
মেখে নেব শিশির পায়ে পায়ে
একটু একটু করে , ভেজা ঘাসে।
তোমার ঘুম ভাঙা চোখের গভীরে
রাতজাগা পাখির সাথে উড়তে উড়তে
উষ্ণ হবো গরম চায়ের ধোঁয়ায় ধোঁয়ায়।

পড়ে থাকবে আলসে সকাল আলুথালু
রাতবস্ত্রের মতো ঘরের এক কোণে ,
ট্রাফিক , আবহাওয়া গুনে নিয়ে দিন
বাড়বে গতানুগতিক কাজের গন্ডীতে ,
ফোন, ইমেল মিটিং এর মিছিলে
দগ্ধ্ , দামাল , নাস্তানাবুদ দিন, দুপুর
ডাকাতি হয়ে যাওয়া আলসে সুখ সবটুকু।

Monday, September 25, 2017

আদিগন্তপুর


যদ্দুর চোখ যায় একটা ধূ ধূ মাঠ ,
মাঠের শেষে ছোট্ট টিলার আভাস
ঝুরি নামা প্রকাণ্ড বটের নীচে
নির্জন রেলস্টেশন , আদিগন্তপুর।

এখানে আমার বাস , আরও দুটি মানুষ।
মোরগের ডাকে ঘুম ভাঙে , কলকলিয়ে
বাসায় ফেরে একদল পাখি সন্ধ্যে হলে ,
নির্জন রাতে চাঁদ বদলে যায় নিজের নিয়মে।

দূরপাল্লার দুটো ট্রেন , সকাল বিকেল।
সবুজ পতাকায় ওদের যেতে দেওয়া আর
জানলায় উঁকিমারা অচেনা মানুষের
চোখে বিস্ময় দেখে দিন যায়।

Monday, September 18, 2017

শালিখ


একটা নিষ্কর্মার ঢেকি শালিখ
বাড়ির সামনের পাতা ঝরে যাওয়া গাছটায়
রোজ বসে থাকে যখন তুমি যাও,
তুমি চলে যাওয়ার অনেক পরে শালিখটা
একটু রোদের  মুখ দেখলেই আরো  কতগুলো
শালিখের সাথে এপাড়া ওপাড়া উড়ে
বেড়ায় গাছ থেকে গাছে।

রাজ্যের কাজের মাঝে আকাশ
দেখার কোন ফুরসৎ থাকে না তোমার ,
সহকর্মী থেকে স্বামী ,
ওপরওয়ালা থেকে আদুরে সন্তান
সবাইকে খুশী রাখার আপ্রাণ চেষ্টায় য্খন তুমি বুঁদ
সেই শালিখটা নীলে আরও নীলে ভেসে যায় ,
আরও দূরে  কতদূরে উড়ে বেড়ায় অন্য  শালিখের সাথে।

Monday, September 11, 2017

ইচ্ছেমতী


তুমি ঠিকই বুঝেছিলে ,
যে দামাল নদীটাকে তুমি দেখেছিলে উৎসে
সে এখন অনেক চরাই উৎরাই পার করে
পথ ভুলে আবার পথ খুঁজে
বয়ে নিয়ে  অনেক পলি নিবিড় হয়েছে
সবুজ বনের গভীরে , এই অবেলায়।

Monday, September 4, 2017

হারিয়ে গেছি


ধরো আমরা সবাই হারিয়ে গেছি ,
উপসাগরের যেদিকে সূর্য্  নামে
ঠিক তার বিপরীতে ,
সোনালী আলোয়।

ধরো আমরা সবাই হারিয়ে গেছি ,
মৃত্যু উপত্যকার যেখানে শিল্পীর রঙ
আর আকাশের রঙ মিলেমিশে এক
সেখানে , সেই রঙে।

ধরো আমরা সবাই হারিয়ে গেছি
আমাদের ব্যক্তিগত দুঃখ , ক্ষোভ ও যন্ত্রনায়,
সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের প্রাত্যহিকতায়।

Readers Loved These Posts