সমস্যাটা হল information overload. একটা মুভি দেখতে যাওয়ার আগে আপনি কি করবেন ? একটু Google Search করে মুভিটার রিভিউ পড়বেন ? পন্ডিতেরা কি বলছে শুনবেন ? আর আজকাল তো promotion এর যুগ। ছবি মুক্তি পাওয়ার আগেই এত ভাল এত ভাল বলে এমন শোরগোল শুরু হয়ে যায় যে মনে হয় ছবিটা না দেখলে জীবনই বৃথা। অথচ “Sonata”-র যতগুলো রিভিউ পড়েছি সবাই বলছে প্রায় সময় নষ্ট। আমাদের এত ব্যস্ত জীবনে সময় নষ্ট করার সময় কোথায় ? তাও আবার হলে গিয়ে ছবি দেখে। এদিকে অপর্না সেন এর ছবি। তার ওপর শাবানা আজমী , লিলেট দুবে। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই , ওই একটা দিল্লী কা লাড্ডু টাইপের ছবি যা দেখলে পস্তাবো, না দেখলেও পস্তাবো এই ভেবে নিয়েই গেছিলাম “Sonata” দেখতে ।
সবাই জানেন ছবিটা Mahesh Elkunchwar এর মূল নাটক “Sonata” অবলম্বনে তৈরী। অপর্না সেন মোটামুটি মূল নাটকটাকেই অপরিবর্তিত রেখেছেন। আরেকটা কথা বলে দেওয়া বোধহয় ভাল , Elkunchwar হাতে গোনা এমন কয়েকজন মারাঠী নাট্যকারের অন্যতম যাঁরা কোনদিন populist ও commercial হাওয়ায় গা ভাসান নি।
“Sonata” তিন মধ্যবয়সী অবিবাহিত মহিলার জীবনের গল্প। তাদের সম্পর্ক , ব্যক্তিগত জীবন , পরস্পরের ওপর নির্ভরতা , হতাশা , আফশোস, একাকীত্ব । Female bonding কে এ ছবির অন্যতম মূল বিষয় বলা যায়। অরুণা চতুর্বেদী (অপর্না সেন), দোলন সেন (শাবানা আজমী ) এবং সুভদ্রা পারেখ (লিলেট দুবে ) এই তিন চরিত্র। তাদের রোজকার জীবন , ব্যক্তিগত ও পেশাদারী জীবনের ওঠাপড়া ঘাত প্রতিঘাত এর মধ্যে দিয়ে psycholgical exploration. সম্পূর্ণ ভাবে dialogue নির্ভর এবং গল্পের সবটুকুই revealed হচ্ছে তিনজনের আলাপচারিতায়। সবকিছুই ঘটছে অরুণা আর দোলনের apartment এ , মুম্বাইতে। চার দেওয়ালের সীমানার মধ্যে আবদ্ধ এরকম drama বা film কে বলা হয় chamber piece. Chamber Piece এর মূল সুবিধা কম budget এ shoot করা যায়। সেরকম challenge ও অনেক। পুরো দেড় ঘণ্টার একটা film যখন ওই সীমিত পরিসরের মধ্যে রাখতে বাধ্য পরিচালক তখন ক্যামেরা খুব creative না হলে এবং Set ও Blocking খুব আকর্ষণীয় না হলে দর্শক খুব সহজেই bored হয়ে যাবেন। এরকম ছবিতে তাই অভিনয় , Set আর cinematography অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। Set আর ক্যামেরা খুব সাবলীল ভাবে এই কঠিন কাজটাকে সামলেছে। আর অভিনয় ? শাবানা , লিলেট ও অপর্না তাদের অভিনয় দিয়েই দর্শককে ধরে রাখতে পেরেছেন শেষ অবধি। তিনজনের মধ্যে শাবানা নিঃসন্দেহে এই ছবিতে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী। অভিনয় ছাড়াও শাবানার নিজের কন্ঠে গাওয়া দুটি রবীন্দ্রসংগীত উপরি পাওনা এই ছবির।
নীল দত্তের আবহ নিখুঁত। ক্যামেরায় শীর্ষ রায় ও সম্পাদনায় রবিরঞ্জন মৈত্র chamber piece এর জন্য য্থায্থ।
অত্যন্ত শক্ত একটা বিষয়কে অসাধারন অভিনয় ,নিখুঁত ক্যামেরার কাজ আর দক্ষ পরিচালনার মাধ্যমে দর্শকের খুব কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছেন “Sonata”-য় অপর্না সেন। “Sonata” হয়ত অপর্না সেন এর শ্রেষ্ঠ ছবিগুলোর মধ্যে একটা নয় তবে নিঃসন্দেহে একটা খুব impactful ছবি।
তবে fast cut, indoor আর outdoor shot এর ক্রমাগত inter-cut, so called action এসব ছাড়া আপনার entertainment পৌষ্টিকতন্ত্রের যদি হজমের অসুবিধা হয় তবে Sonata আপনার জন্য নয়। যদি গভীরে যেতে চান , আরও গভীরে যেখানে এসব খুব একটা matter করে না তবে অবশ্যই দেখবেন ছবিটা। আমার বিশ্বাস সকলেরই মাঝে মাঝে এই গভীরতাটার দরকার হয় , ভাল লাগে। ঠিক সেই কারণেই “Sonata”-র মতো ছবি তৈরী হয়।