Wednesday, January 31, 2018

আশার গান , যাওয়ার মগ

Image Courtesey pixabay.com


বেকার বকবক # ১৩

শ্রাবনের ধারার মতো তখন H1B land করছে Silicon Valley তে।  আমি এসেছি কিছুদিন আগে।  তাই আমার ওপর দায়িত্ব পড়তো আমার company র যারা নতুন আসছে তাদের airport এ receive করতে যাওয়ার।  বিশেষত বাঙালী হলে।  সেই শনিবার আসছিলেন নিতাইদা।  Office থেকে বলেছিল NK , অর্থাৎ নিতাই কুমার।  San Francisco এয়ারপোর্ট এ গিয়ে অপেক্ষা করছি ,সঙ্গে আমার বন্ধু কবীর ।  নাম জানি , কিরকম দেখতে জানি না, একটা ছবি যদিও দেখেছিলাম তবে তার থেকে একটা ক্ষীণ অনুমান করা যায় মাত্র ।  কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পর suit tie পরা এক ভদ্রলোক যেভাবে গটমট করে হেঁটে বেরোলেন আমাদের মনে হল এ নিশ্চয়ই Mr Nitai।  কবীর  বলল “মেরেছে , আমেরিকা আসছে ভেবে Suit Tie চাপিয়েছে “ . আমাদের অনুমান ভুল হয়নি।  উনিই নিতাইদা।

গাড়িতে suitcase তুলে আমরা start করেছি।  নিতাই দা বললেন “একটা মগ কিনতে হবে “ . মগ ? আমেরিকা পৌঁছে Suit Tie পরা একটা লোকের প্রথম চাহিদা মগ ? আমার মাথায়  কিঞ্চিৎ কি জানি কি হয়।  “কি মগ Mr Nitai ? “ আমি জিজ্ঞেস করলাম।  “আরে , যাওয়ার মগ “ , নিতাইদার উত্তর।  যে হোটেলে ওনার থাকার ব্যবস্থা সেখানে পৌঁছে  কিছুক্ষন কথা বলে বুঝলাম ভদ্রলোক Toilet Tissue তে বিশ্বাস করেন না। সম্পূর্ণ Organic পথেই উনি চলতে চান।  তারপর Target, Walmart আর কিছু ছোট খাটো দোকানে মগান্বেষনে গেছিলাম আমরা।  কোন মগই পছন্দ হয় না। কোনটাই নাকি ঠিকঠাক ঢালার মতো shape নয়।  Finally “এটা দিয়েই চেষ্টা করে দেখি “ বলে কিনেছিলেন একটা মগ।  ব্যবহার করে আত্মার তৃপ্তি হয়েছিল কিনা আর জানতে চাইনি।

Tuesday, January 30, 2018

"ময়ূরাক্ষী" - A Review



অতনু ঘোষের কাজের সাথে আমার প্রথম পরিচয় বেশ কয়েক বছর আগে ওঁর তৈরী কয়েকটা Telefilm দেখে।  "মেঘ বৃষ্টি রোদ ", "মিশ্ররাগ" বা "সুমিত্রা অনলাইনের" মতো টেলিফিল্ম গুলো দেখে মনে হয়েছিল বেশ অনেকদিন পর একজন বাঙালী ডিরেক্টর এলেন যিনি human relationship নির্ভর গল্প বেশ নিখুঁত ভাবে celluloid এ আঁকতে পারেন।  তারপর থেকে অতনুর  ছবি আমি কমবেশী follow করেছি।  পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি অতনু শুরু করেন "অংশুমানের ছবি " দিয়ে।  তারপর পর পর "তখন তেইশ" , "রূপকথা নয়" , "একফালি রোদ " , "Abby Sen " . কিন্তু কোন ছবিতেই টেলিফিল্মের সেই অতনুকে আর পাইনি।  অতনুর নতুন ছবি "ময়ুরাক্ষী " .  প্রত্যাশা ছিল অনেক ,  কিন্তু এবারেও সেই ছোট ছবির অতনুকে পেলাম না।  

ময়ূরাক্ষী নিয়ে অনেক review লেখা হয়েছে , অনেক কথা , অনেক interview , অনেক আলোচনা, অনেক promotion ।  সুতরাং কি বিষয় নিয়ে "ময়ূরাক্ষী " তা বোধহয় বলার দরকার নেই।  আর খুব কিছু বলার নেই in fact . Aging Parents আর আমাদের সমাজের ওপর globalization এর প্ৰভাৱ।  খুব পরিচিত বিষয়।   বিশেষ করে আমরা যারা দেশ ছেড়ে অনেক বছর, তাদের খুব কাছের বিষয়।  Chicago-বাসী আর্যনীল কলকাতা আসে তার অসুস্থ বাবা  সুশোভনকে দেখতে।  চুরাশি বছরের সুশোভন কিছুটা dementia আর neurological সমস্যা নিয়ে অসুস্থ।  এধরনের অসুস্থতা যেভাবে পায়ে পায়ে এগিয়ে যায় অবনতির দিকে তাই ঘটছে সুশোভনের।  অল্পকদিনের জন্য এসে বাবার কাছে থাকে আর্যনীল।  এই কটাদিনই ছবির সময়সীমা।

Tuesday, January 23, 2018

ওরে মন



Image Courtesy pixabay.com

                                                                                                                               
বেকার বকবক # ১২


আমি একটু পেরাইভেট মানুষ।  মানে মনের কৌটোয় ঢাকনা লাগিয়ে থাকতে ভালবাসি।  আমার মনের কথা কেউ চট করে বুঝে যাবে ভাবলে একটা কিন্তু কিন্তু ভাব হয়।  কোনসময় যদি মনে হয় কেউ আমাকে বুঝে ফেলছে তখন যথাসাধ্য চেষ্টা করি মনের মধ্যে একটা দমকা হাওয়া এনে সব পাতা গুলোকে ওলট পালট করে দেওয়ার, যাতে যতটুকু যা বুঝেছিল তা যেন গুলিয়ে যায়।  আমার মতো মানুষের পক্ষে আজকাল টিঁকে থাকা প্রায় দায়।  সারাক্ষণই মনে হয় কেউ না কেউ আমার মনের কথা বুঝে ফেলার চেষ্টা করছে।  কে বা কারা যেন সবসময় আতিপাতি করে খুঁজছে আমার মনের পাতায় লেখা formula গুলো আর তাই দিয়ে লম্বা লম্বা deduction করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।  এই ধরুন সেদিন দুপুরে ভাতঘুম দেওয়ার আগে Laptop এ আনন্দবাজার এ মহারাণীর গল্প পড়ছি হঠাৎ একজন এসে জিজ্ঞেস করল “আপনি কি SAT Score বাড়াতে চান ?”. এই বয়েসে SAT score ? মশা মারার মতো করে তাকে তাড়ালাম।  ও বাবা মুহূর্তের মধ্যে আরেকজন লাফিয়ে উঠে বলে “ তাহলে কি Mortgage rate কমাবেন ?”. লাগে তাকে না লাগে তুক।

Tuesday, January 16, 2018

ইতিহাস


Image Courtesy pixabay.com 



বেকার বকবক #১১

অনেক বছর আগে তারও অনেক অনেক বছর আগের একটা ঘটনা আমাকে খুব জ্বালিয়েছিল।  আমাকে একা নয় , আমার মতো অনেককে।  তখন ক্লাস টেন।  মাধ্যমিক পরীক্ষা এসে গেছে প্রায়।  কে একটা খবর নিয়ে এল এবার ইতিহাস পরীক্ষায় মুঘল  সাম্রাজ্যের পতনের কারণ  জানতে চাওয়া হবে।  ইতিহাস পড়তে আমার খুব একটা ভাল লাগত না তাই একটা প্রশ্ন common পরা খুব সৌভাগ্যের ব্যাপার।  সুতরাং স্কুলের নোট , ছাত্রবন্ধু , ইতিহাস বই ঘেঁটে মুঘল  সাম্রাজ্যের পতনের কারণগুলো list করলাম এবং দুলে দুলে সকাল বিকেল মুখস্থ করতে লাগলাম।  মুখস্থ প্রায় হয়ে এসেছে তখন আমার এক দিদি  জিজ্ঞেস করলো “কটা point পেয়েছিস ? “ . আমি দশটা কারণ  almost গড়গড় করে মুখস্থ বলে দিলাম।  শুনে সে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল 60% পাবি।  একটু চেপে ধরতে জানতে পারলাম ওই দশটা কারণ  নাকি সবাই জানে , সবাই লিখবে।  তাই ভাল নম্বর পেতে গেলে নাকি at least চোদ্দ পনেরটা কারণ  দর্শাতে হবে।  আমি পড়লাম ভীষণ ফ্যাসাদে।  আরও চার পাঁচটা কারণ  কোথায় পাব ? আমার কোন গৃহশিক্ষক ছিলেন না।  মা কে জিজ্ঞেস করলাম , মা বলল বাড়ির হাজারটা কাজ ফেলে রেখে মায়ের পক্ষ্যে তখন মুঘল  সাম্রাজ্যের পতনের কারণ  খোঁজা সম্ভব নয়।  পাড়ার রকে এক দাদা আড্ডা মারতো যে ইতিহাস অনার্স নিয়ে পড়ে তখন বেকার।  তাকে ধরলাম।  সে বলল “জয়কৃষ্ণ পাবলিক লাইব্রেরীতে চলে যা ওখানে পেয়ে যাবি ”।  লাইব্রেরি আমার বাড়ি থেকে প্রায় আধ ঘণ্টার হাঁটা।  সাইকেল নিয়ে GT Road এ যাওয়ার অনুমতি ছিল না , সুতরাং হাঁটা দিলাম। রিক্সা , সাইকেল, গাড়ি , লোকজন , রাস্তার ধারে দোকান, সবজি বাজার আর আমি হাঁটছি।  রাস্তার ধারে একটা সদ্য গজিয়ে ওঠা শনি মন্দিরে ঢং ঢং করে ঘণ্টা বাজিয়ে পুজো হচ্ছে , এক মোড়ে পার্টির মিটিঙে  সাম্রাজ্যবাদীদের কালো হাত নিয়ে কিসব বলা হচ্ছে, একটা রিকশা প্যাঁক প্যাঁক  করতে  করতে কানের পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেল বলতে বলতে আগামী শুক্রবার “ দীপক” সিনেমা হলে “meri AWAZ suno “ আসছে। এই সবকিছুর মধ্যে হোঁচট খেতে খেতে আমি চলেছি মুঘল  সাম্রাজ্যের পতনের কারণ খুঁজতে । যখন লাইব্রেরি তে পৌঁছোলাম তখন শুনলাম পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে library র সব কর্মীরা ধর্মঘট করেছেন ,আমাকে আরেকদিন যেতে হবে। খুব হতাশ হয়ে  বাড়ি ফিরে এলাম।

Thursday, January 11, 2018

“I Love You”

Image courtesy pixabay.com


বেকার বকবক # ১০


চিলেকোঠার ঘরে আমরা চার বন্ধু।  তখন বোধহয় ক্লাস এইট।  পরিস্থিতি ঘোরালো।  তপু স্কুলে একটি মেয়েকে “I love you” বলে ফেঁসে গেছে।  মানে মেয়েটি কথাটার মর্ম অনুধাবন না করে  Sir কে বলে দিয়েছে আর তার ফলে তপুর guardian call হয়েছে।  “কি দরকার  ছিল “I love you” বলার কে জানে, শুধু একটা চোখ মারতে পারতি” প্রবীরের বক্তব্য ।  অনির্বাণ এর অভিজ্ঞতা একটু বেশী কারন তার মাস দুয়েক আগেই ও বাড়িতে casually “Love” কথাটা বলে বাবার কাছে বেধড়ক মার খেয়েছিল।  ও বলল Sorry বলবি, বলবি আর কোনদিন বলব না ব্যাস বেশী মার খাবি না।  তপু ব্যার্থ প্রেমিকের মতো তাকিয়ে থাকল ।  আমি বললাম প্রমাণ কি আছে তুই বলেছিস ? কিন্তু সমস্যাটা হল কেউ প্রমাণ খুঁজছে না , এরকম খারাপ কথা কেউ কাউকে বলতে পারে ভাবা যায় না , সুতরাং guardian call।  এবার যদি তপুকে স্কুল থেকে rusticate করে দেয় কি হবে সেটাই আলোচ্য বিষয়।  

আলোচনা করে আমরা খুব একটা কিছু করতে পারিনি।  তপুর বাবা school এ গিয়ে খুব অপমানিত হয়েছিলেন।  বাড়ি এসে তপুকে বলেছিলেন “এই জন্য তোমাকে পয়সা খরচ করে ভাল স্কুলে পাঠাচ্ছি ? খারাপ খারাপ কথা শিখছ ? “ Sentence টা শেষ করে তপুকে এমন একটা চড় মেরেছিলেন যে তপু পরের ছমাস গালে হাত দিয়ে থাকত , কারন মেয়েরা ওই চড়ের দাগ দেখে হাসাহাসি করত। পরে তপুর বাবা আর আমাদের school এর Principal এর মধ্যে conversation টা exactly কি হয়েছিল তাই নিয়ে অনেক রসালো গপ্পো করেছি আমরা। জানা গিয়েছিল তপু আর জীবনে ওরকম খারাপ কথা উচ্চারণ করবে না এরকম একটা কিছু মুচলেকা দিয়ে তপুকে school থেকে rusticate হওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন ওর বাবা।  

Thursday, January 4, 2018

গরুর রচনা




বেকার বকবক # ৯


আমার বাংলা রচনা লেখার হাতেখড়ি গরুর রচনা দিয়ে।  গরু গৃহপালিত পশু , গরুর চারটে পা দুটো শিং একটা লেজ ইত্যাদি দিয়ে শুরু করে হাম্বা হাম্বা।  কতবার যে লিখেছি সে রচনা তার হিসাব নেই।  আর গরুর রচনা মুখস্থ করে পরীক্ষা দিতে গিয়ে অন্য্ কোন রচনা আসলেও গরুতে গিয়ে শেষ করেছি আমরা অনেকেই।  যেমন ধরুন বন্যার ওপর রচনা লিখতে বলা হল , বন্যার ভয়াবহতা নিয়ে দুচার কথা লিখে কয়েকটা গরুকে বন্যায় ভাসিয়ে দিন  , দিয়েই চারটে পা দুটো শিং আর লেজ পাকড়ে হাম্বা হাম্বার পথে চলে যান , full marks না হলেও পাতা ভরিয়ে দেওয়া গেল।  আমার এক বন্ধু বাংলা পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় রাস্তায় কোন গরু দেখলে খুব ভক্তিভরে প্রণাম করতো , তারপর পরীক্ষায় “পারমাণবিক অস্ত্র” থেকে “বিশ্ব খাদ্য সমস্যা” যে রচনাই লিখতে বলা হোক গরুকে টেনে এনে খুব তৃপ্তি সহকারে লিখতো। মোদ্দা কথা গরু আমাদের স্কুল জীবনে রচনা ক্লাসে মহান পরিত্রাতার ভূমিকা পালন করেছে।  

Readers Loved These Posts