হল থেকে বেরোনোর সাথে সাথে একজন জানতে চাইলেন কেমন লাগল ছবিটা। সরাসরি কোন উত্তর দিতে পারলাম না। আমি খুব টগবগিয়ে কথা বলতে পারি না। কিন্তু তার থেকেও বড় কথা, এই ছবিটা কেমন ছবি সে কথার উত্তর এক কথায় ভাল বা মন্দ বললে ছবিটার প্রতি সুবিচার করা হয় না। মোস্তাফা সারোয়ার ফারুকি-র ছবি ‘ডুব’ human relationships এর ছবি। এই বিষয়টা দর্শককে সবসময়ই ভাবায় কারণ সম্পর্ক বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন স্তরে আমাদের ছুঁয়ে যায়, অবশ্যই যদি পরিচালক ঠিক ঠিক ভাবে সম্পর্কের সূক্ষ তার গুলোকে সুরে বাঁধতে পারেন। Drama ও melodrama র মধ্যে ব্যাবধান খুব সূক্ষ । ফারুকি সেই ব্যবধানটা বেশ মুনশিয়ানার সাথে টান টান রাখতে সফল হয়েছেন “ডুব”-এ যা খুবই শক্ত কাজ । আমার মতে ছবিটার সবচেয়ে বড় সাফল্য এখানেই।
চরিত্র মূলত চারটি। জাভেদ (ইরফান খান ), মায়া (রোকেয়া প্রাচী ), নিতু (পর্নো মিত্র ) এবং সাবেরী (নুসরত ইমরোজ তিশা) . প্রতিষ্ঠিত চিত্রপরিচালক জাভেদের স্ত্রী মায়া ও মেয়ে সাবেরী। নিতু সাবেরীর স্কুলের বন্ধু। জাভেদের সাথে নিতুর সম্পর্ক এবং তার জের কিভাবে এই চারটি চরিত্রকেই প্রভাবিত করেছে সেটাই ছবির মূল বিষয়। গল্পে নতুনত্ব কিছু নেই , তবে এরকম ঘটনা যে সম্পর্কের জটিলতা সৃষ্টি করে ফারুকি তাকেই ধরার চেষ্টা করেছেন খুব সংবেদনশীলতার সাথে।
অভিনেতারা সকলেই পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত। এবং তাদের অভিনয়ের নিজস্ব style আছে। যেভাবে চরিত্র গুলোকে দেখানো হয়েছে তাতে casting যথাযথ হয়েছে বলা যায়। সকলেই ভাল অভিনয় করেছেন , বিশেষ করে প্রাচী ও তিশা। নিতু-র চরিত্রটা আরেকটু ভালভাবে দাঁড় করানো উচিত ছিল। নিতুকে এ ছবির villain হিসেবে মনে হয়েছে , হয়ত সেটা ঠিক নয়। নিতু ও জাভেদের মধ্যে সম্পর্কটা আরেকটু real estate পেলে script টা আরো মজবুত হত বলে আমার ধারণা।
এ ছবির আরেকটা উল্লেখযোগ্য বিষয় হল visuals. অসম্ভব ভাল এবং বুদ্ধিদীপ্ত ক্যামেরার কাজ। Cinematographer শেখ রাজিবুল ইসলাম অনেকটা কৃতিত্ত্ব দাবী করেন নিঃসন্দেহে। Music ও ছবির বিষয় ও গতির সাথে মানানসই।
নিছক entertainment এর ওপরও যদি কিছু চান , এমন ছবি যা আপনাকে ভাবাবে বা ছুঁয়ে যাবে তবে “ডুব”-এ ডুব দিয়ে দেখুন , পস্তাবেন না।