বেকার বকবক #২৫
যে ছেলেটা রোজ সকালে অসীম দক্ষতায় খবরের কাগজটা একটা গার্ডার দিয়ে বেঁধে ঠিকঠাক টিপ্ করে ছুড়ে পৌঁছে দিয়ে যায় দোতলার বারান্দায় সেই ছেলেটা জানে না। ঘুম থেকে উঠে দোতলার মল্লিক বাবু চায়ের কাপ হাতে সকাল সকাল পেয়ে যান ওই মুহূর্তে ওনার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ , খবর। কালো রঙের ছাপা অক্ষর গুলো দূর দূর থেকে নানা রঙের ছবি এঁকে দিয়ে যায় মল্লিকবাবুর মনে। যদিও ইদানিং চায়ের কাপে মেরি বিস্কুটের MA অবধি ভেজাতে ভেজাতে হেডলাইন গুলো পরে রিরি করে ওঠে ওনার শরীর। এ কি সব খবর ! তবু পড়েন। প্রথম পাতা থেকে শেষ পাতা। সাদা কালো রঙীন। কোন কোন খবরের কোন রঙ থাকে না। কোন খবর বাসী , কোনটা ভেজাল , কোন কোনটা আবার খবরই না। নিজস্ব সংবাদদাতার পাতা ভরানোর আছিলা। আবার জবর খবর বলে কাগজ বেচার চকমকি। তাও মল্লিকবাবু পড়েন , কারন না পড়লে ওই সকালের কাজটা ওনার সুসম্পন্ন হয়না। অনেকদিনের অভ্যেস বলে কথা। বাচ্চা ছেলেটা জানে না , কিন্তু বাড়ি বাড়ি কাগজ বিলি করে একটু পাউরুটি আলুর দম খেতে পায়। না হলে তো খাবার জোটে না।
মল্লিকবাবুর ছেলে খবর পরে তার iPad এ। গিন্নি টিভির পর্দায়। পাশের বাড়ির কলেজ যাওয়া মেয়েটা টুইটারে। রাম শ্যাম জদু মধু যা খবর পাওয়ার পায় হোয়াটস্যাপে। আর আছে ফেসবুক নিউজ। সেখানে সবাই খবর। জবর খবর , ফেক নিউজ , লাইভ কভারেজ , সেখান থেকে বলছি , লেটেস্ট নিউজ , উড়ো খবর , ওয়ার্ল্ড নিউজ, ফ্যাশন নিউজ , টলি বলি হলি নিউজ। শেষ নেই, অফুরন্ত খবর আর খবর। তৈরী হচ্ছে , পরিবেশিত হচ্ছে , আর গোগ্রাসে গিলছে সবাই। ওই ছেলেটা জানে না। বাড়ি বাড়ি কাগজ দেওয়া শেষ হলে স্কুল যেতে হবে ওকে।