Thursday, November 29, 2018

মাতাল ও চ্যাংদোলক


বেকার বকবক #২৬

শিরোনাম পড়ে যদি ভাবেন কচ ও দেবযানী বা  লায়লা ও মজনু গোছের কোন প্রেম কাহিনী বলতে বসেছি তাহলে ভুল ভেবেছেন। ভুল ভেবেছেন যদি মনে করেন আবার সেই পুরোনো মদ নতুন বোতলে কোন মাতালের গল্প আসছে। ভুল কারন মাতাল ও চ্যংদোলকের সম্পর্ক আরেকটু গভীর , নিগূঢ় বলা যায়।  

মাতাল কি বা কেন তাই নিয়ে কারো মনে কোন সংশয় থাকার কথা নয় ।  মাতাল সবাই দেখেছেন কিংবা কমবেশী মাতলামি সবাই করেছেন , খেয়ে বা না খেয়ে।  সভ্যতার হ্যাঁচকা টানে  অনেকেই নাইট ক্লাব বা bar এ গেছেন।  বেশ করেছেন। একই ছাদের নীচে এত মাতাল সমাগম আর কোথায় পাবেন ?  তবে ভুল বুঝবেন না , সব মাতালই মালখোর কিন্তু সব মালখোর মাতাল নয়. বন্যরা যদি বনে সুন্দর হয় মাতালরা Bar এ।  Bar এ বা নাইট ক্লাবে লক্ষ্য করেছেন নিশ্চয়ই কান ফাটা  music এর সাথে দলবদ্ধ ভাবে মাতালরা তাল ঠুকছেন।  সোম ও ফাঁক ঠিকঠাক  পড়ছে।  আপনার কি অবস্থা তার ওপর নির্ভর করছে যদিও  , কিন্তু তালে তালে মাতালরা নাচে , মনে হয়।  এটা মাতালদের একটা বিরাট বৈশিষ্ট্য।  অর্থাৎ জাতে মাতাল হলেও তালে ঠিক।  এবার ধরুন কোন মাতাল যদি বেতালা হয়ে যায় , তখন যার আবির্ভাব ঘটে তার নাম চ্যাংদোলক।  এদের কাজ হল অন্য্ কোথা অন্য্ কোনখানে যেতে চাওয়া মাতালদের চ্যংদোলা করে Bar এর বাইরে বের করে দেওয়া।  সভ্য ভাষায় এদের বলা হয় Bouncer .অর্থাৎ জাত যাবে না , তাল যাবে না , গেলে সামলাবে চ্যাংদোলক। এই কারণে  , ঠিক এই কারণেই  সব bar ও night club এ কয়েকজন চ্যাংদোলক থাকেন।  এদের উদ্দেশ্য মহৎ। এরা  সমাজসেবী । 

কিন্তু বড় সমস্যা হল মাতালদের যেমন আপনি সর্বত্র পাবেন , চ্যংদোলকদের পাবেন না।  দিন দিন পৃথিবীতে বেতালা মাতালের সংখ্যা যে হারে বাড়ছে সেই হারে চ্যংদোলকের সংখ্যা বাড়ছে না , বরং কমছে।  এর জন্য কে দায়ী তার খোঁজ করার জন্য google search করতে পারেন , বিচার বিভাগীয় তদন্ত বসাতে পারেন , দুপাত্তর খেয়ে ভাবতে বসতে পারেন কিন্তু উত্তর মেলার চান্স কম।  কোন এক পন্ডিত প্রচুর রিসার্চ করে একবার বলেছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী চ্যাংদোলক নাকি মানুষের ভোট।  নির্ঘাত বেশ কয়েক পেগ খেয়ে নেশার ঘোরে বলেছেন , না হলে White House থেকে নবান্ন , ক্রেমলিন থেকে দিল্লির মসনদ সব জায়গায় এতো মাতাল সমাবেশ হয় ? তাহলে ? আমরা কি সবাই ভোটে মাতাল , তালে ভুল ?

Thursday, August 23, 2018

খবর




বেকার বকবক #২৫


যে ছেলেটা  রোজ সকালে অসীম দক্ষতায় খবরের কাগজটা একটা গার্ডার দিয়ে বেঁধে ঠিকঠাক টিপ্ করে ছুড়ে পৌঁছে দিয়ে যায় দোতলার বারান্দায় সেই ছেলেটা জানে না।  ঘুম থেকে উঠে দোতলার মল্লিক বাবু চায়ের কাপ হাতে সকাল সকাল পেয়ে যান ওই মুহূর্তে ওনার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ , খবর।  কালো রঙের  ছাপা অক্ষর গুলো দূর দূর থেকে নানা রঙের ছবি এঁকে  দিয়ে যায় মল্লিকবাবুর মনে।  যদিও ইদানিং চায়ের কাপে মেরি বিস্কুটের MA অবধি ভেজাতে ভেজাতে হেডলাইন গুলো পরে রিরি করে ওঠে ওনার শরীর।  এ কি সব খবর ! তবু পড়েন।  প্রথম পাতা থেকে শেষ পাতা।  সাদা কালো রঙীন।  কোন কোন খবরের কোন রঙ থাকে না।  কোন খবর বাসী , কোনটা ভেজাল , কোন কোনটা আবার খবরই না।  নিজস্ব সংবাদদাতার পাতা ভরানোর আছিলা।  আবার জবর খবর বলে কাগজ বেচার চকমকি।  তাও মল্লিকবাবু পড়েন , কারন না পড়লে ওই সকালের কাজটা ওনার সুসম্পন্ন হয়না।  অনেকদিনের অভ্যেস বলে কথা।  বাচ্চা  ছেলেটা জানে না , কিন্তু বাড়ি বাড়ি কাগজ বিলি করে একটু পাউরুটি আলুর দম খেতে পায়।  না হলে তো খাবার জোটে না।  

মল্লিকবাবুর ছেলে খবর পরে তার iPad এ।  গিন্নি টিভির পর্দায়।  পাশের বাড়ির কলেজ যাওয়া মেয়েটা টুইটারে।  রাম শ্যাম জদু মধু যা খবর  পাওয়ার পায় হোয়াটস্যাপে।  আর আছে ফেসবুক নিউজ।  সেখানে সবাই খবর।  জবর খবর , ফেক নিউজ , লাইভ কভারেজ ,  সেখান থেকে বলছি , লেটেস্ট নিউজ , উড়ো খবর , ওয়ার্ল্ড  নিউজ, ফ্যাশন নিউজ , টলি বলি হলি নিউজ।  শেষ নেই, অফুরন্ত খবর আর খবর। তৈরী হচ্ছে , পরিবেশিত হচ্ছে , আর গোগ্রাসে গিলছে সবাই।  ওই ছেলেটা জানে না।  বাড়ি বাড়ি কাগজ দেওয়া শেষ হলে স্কুল যেতে হবে ওকে।

Wednesday, August 15, 2018

ঢিপি





বেকার বকবক #২৪


রক্তচাপের সমস্যা আমার কোনদিন নেই।  বছরে একবার ডাক্তারের কাছে check up এর জন্য গেলে সবসময়ই ওই ফুস ফুস ফুউস করে Blood Pressure মেপে ডাক্তারবাবু চাপ নিও না গোছের এর একটা হাসি দেন।  আর চাপ নেওয়ারই বা আছে কি , আমি তো বিন্দাস আছি।  কিন্তু ইদানিং একটা কিছু হচ্ছে।  মাঝে মাঝে কিরকম মাথা ঘোরে , চোখে ঝাপসা দেখি , কোথায় যেন একটা কি গুড়গুড় করে ওঠে।  বুঝি না ঠিক।  সবসময় না , মাঝে মাঝে।  হচ্ছে হোক চলছে চলুক করে বেশ কদিন কাটিয়ে দিলাম। আবার  একদিন মাথাটা কিরকম ঘুরে উঠলো  , ওই গুড়গুড়টাও।  ব্যাপারটা  নিয়মিত হয়ে ওঠার পর একদিন চলেই গেলাম ডাক্তারের কাছে।  নানারকম প্রশ্ন করে আমায় ব্যতিব্যস্ত করে শেষে বলে কিনা তোমার pressure টা monitor করতে হবে।  Blood Pressure ? আমার ? যাক গে , হল সে monitoring. সপ্তাহ দুয়েক পর অনেক data analysis করে তিনি বলেন উনি নাকি দুটো ঢিপি মতো দেখতে পাচ্ছেন ! আরও কাওতালির পর বুঝলাম আমার BP দিনের দুটো সময় অনেকটা high  হয়ে যাচ্ছে , বাকি সময় normal . একটা graph  আঁকলে তাই দুটো  ঢিপি দেখা যাচ্ছে।  কিসের থেকে এটা হচ্ছে ? জিজ্ঞেস করলেন মাঝ সকালে আর ভর সন্ধ্যেবেলা আমি কি করি।

কি করি কি করি করে চিন্তায় পড়লাম।  ভাবলাম।  আরও ভাবলাম।  গল্পের একটা গরু গাছে ওঠার চেষ্টা করছিল তাকে বকেঝকে  টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে practically ভাবলাম। তাও প্রায় কিছুই পাই না।  "মাঝসকাল" আর "ভরসন্ধ্যে" শব্দগুলো বিড়বিড় করলাম কিছুক্ষন।  তারপর হঠাৎ মনে হল আজকাল সকালবেলা মাঝে মাঝে কিরকম যেন মনে হয় দিন শেষ হয়ে এল।  ভরসন্ধেবেলাও কি যেন  .... চোখ বুজতেই দেখতে পেলাম  হাঁস , নদী ,উষ্ণ  প্রস্রবণ , নেতাজী , ফুল , মেকআপ নেওয়া সূয্যিমামা , সুন্দরী রমনী , বাঘ , পাখি , ঝর্না , পাহাড় , শ্রীরামকৃষ্ণ এমন কি এক জোড়া হনুমান ও আমার দিকে Good Morning , Good Morning ,  সুপ্রভাত , সুপ্রভাত বলতে বলতে ছুটে আসছে।  এ ধরাধামে যে কবছর আছি এত good morning আগে আমায় কেউ বলেনি।  প্রভাত আমার এত সু হয়নি আগে কোনদিন যত  হয়েছে গত কয়েকমাসে , তাও ভরসন্ধেবেলা । মনে পড়ল এ কোন সকাল রাতের চেয়েও অন্ধকার গানটার অন্তর্নিহিত অর্থও তো বুঝতে পারছি ইদানিং ই ।  তাহলে কি সত্যি তাই ? আমার মাঝসকালের ঘুমঘুম ভাব  , আমার ভরসন্ধ্যের কদম কদম বাড়ায়ে চল তাহলে কি ?

ডাক্তারের অফিস থেকে ফোন করেছিল।  বলেছি আমি ঠিক আছি।  সকাল আর সন্ধ্যে আসলেই বুক ঢিপ ঢিপ করে , আমি ঢিপিতে উঠি আবার ঢিপি থেকে নামি।  দিনে দুবার।  নিয়ম করে। সামলে সুমলেই চলছিলাম।  আজ আবার  সারাদিন ধরে আমার হোয়াটস্যাপ  জুড়ে পতপত করে হাজার হাজার তেরঙা পতাকা উড়ছে , উড়ছেই।  আর ভাল লাগছে  না জানেন ? মনে হচ্ছে ওই ঢিপির ওপর উঠে ঝাঁপ দিয়ে পরতে পরতে  বলি , 'এ আজাদি ঝুটা হ্যায় , বিলকুল ঝুটা হ্যায়'।



Friday, May 4, 2018

অবলাকান্ত


বেকার বকবক #২৩


অবলাকান্ত মস্তান হতে চেয়েছিল। ছোটবেলায় বড়রা যখন “কি দিলাম দেখলে “ tone এ ছোটদের মতো প্রশ্ন করতো “কি , বড় হয়ে কি হবে ? “ তখন অবলাকান্ত একটুও মাথা না চুলকে বলত “মস্তান” তাতে কেউ কেউ পুলকিত হোত , কেউ কেউ রুষ্ট।  আবার কেউ কেউ ভয় পেত , “কি হবে এই ছেলের” গোছের ভয়। তাতে অবলাকান্তর কিছু আসত যেত না। লক্ষ্য স্থির করে এগোচ্ছিল। শুরুটা ভালই করেছিল। আট বছর বয়েসে পাড়ায় তুমুল ডানপিটে ছেলে হিসেবে নাম , বারোতে লোকের বাগান থেকে আম চুরি, পেয়ারা চুরি ; চোদ্দোয় স্কুলে মারামারি করে গার্জেন কল পনের বছর বয়সে একটা steel এর বালা পরল হাতে, তারপর একটা ছেলেকে এমন ঘুষি মারল যে তার নাক থেকে গলগল রক্ত।  পাড়ায় ক্রিকেট খেলতে গিয়ে অবলাকান্তকে এক ball এ clean bowled করে দেওয়ার খেসারৎ ছিল ওই ঘুষি। সুতরাং একটা terror terror ভাব জমে উঠছিল বেশ ভালোই। কিন্তু ওই যা হয় , চাওয়া পাওয়ার মধ্যে tug of war তো চিরন্তন। ষোল বছর বয়েসে অঙ্ক পরীক্ষায় বিরানব্বই পাওয়ার পর অঙ্ক মেলার সম্ভাবনায় কিরকম যেন একটা ভাটা পড়ল। বাবা মা থেকে পাড়ার লোকজন, বন্ধু থেকে স্কুলের মাস্টারমশাইরা অবলাকান্তকে বোঝাতে লাগল পড়াশুনাটা নাকি ওর হবে। হিসেবে কিসব গন্ডগোল হয়ে গেল । গাড়ি ঘোড়া চরার লোভে অঙ্ক বিজ্ঞান ইতিহাস ভূগোলের সাথে ঘুষোঘুষিটাই বেশী শুরু করে দিল অবলা।  মাঝেসাঝে অন্য target এ ঘুষি যে চালায়নি তা নয় তবে সেই ধার আর ছিল না , আস্তে আস্তে কমে আসছিল।

Friday, April 13, 2018

হালখাতা

বেকার বকবক #২২


ব্যয় হয়ে গেছে সব কিছু।  মুছে গেছে সব দেওয়া কথার স্মৃতি ।  নাছোড়বান্দা জীবন এলোমেলো করে দিয়েছে সব হিসেব।  Balance Sheet ফাতরাফাত।  নবজাতকের কাছে করা সব অঙ্গীকার খোলামকুচির মতো উড়ে গেছে হাওয়ায়।  আয়ের ঘরে কটা টাকা , কিছু ছদ্ম রোশনাই, মেকি সুখ আর হাসি হাসি অন্তঃসারহীন selfie ।  ব্যয়ের ঘরে বাকি সব কিছু।  খরচের খাতায় রক্ত , গুলি , মানবিকতা , শান্তি , ভালবাসা আরও কত কি।  তাও টলমল করে হাঁটি। সামলে নিতে চেষ্টা করি।  মুখ থুবড়ে পড়ি, আবার উঠি।  চলার নামই  নাকি  জীবন।  এভাবেই চলতে চলতে  … ধুত্তোর, বলছে সবাই এগোচ্ছি। ভাইকে মেরে, বোনকে পুড়িয়ে, মানুষ ঠকিয়ে, সন্তানকে খুন করে, এগোচ্ছি। কোথায় কেউ জানিনা। অথচ খরচ হয়ে গেছে আলো , আছে শুধু অন্ধকার আর তার মাঝে আশা মাখা কটা ভীরু জোনাকি।  তবু আছে। এভাবেই কাটছে দিন। এভাবেই সপ্তাহ পেরিয়ে মাস, মাস গেলে বছর, নিয়মের।

টলমল পায়ে যেতে যেতে ধূলো ঝড় উঠেছে আবার। ভাঙছে গাছের ডাল। উড়ে যাচ্ছে শুকনো পাতা। ঝরে যাচ্ছে আমের মুকুল।  “এ বছর কি ভাল আম খাওয়া হবে না”-র চিন্তা ফিরে এসেছে আবার।  পাড়ায় পাড়ায় সেই চৈত্রের সেল।  হুজুগের দিনে উঠবে শুভেচ্ছার ঝড়। “জীর্ণ  পুরাতন যাক ভেসে যাক”-এর বিধি মেনে বাৎসরিক গুনগুন। “ভাল কাটুক , শুভ হোক”-এর copy paste  ।  নিয়ম মাফিক গলাগলি আর ভালবাসা বিনিময় শেষ হলে আবার খরচাপাতি।  আবার মুখ থুবড়ে পরা।  তার থেকে আসুন সেই লাল খাতাটা বার করি।  নতুন খাতা।  লাল মলাট , কাপড়ের।  অদ্ভুত দেখতে , লম্বা মতো।  ভাঁজ করে রাখতে হয় , বাঁধতে হয় ফিতে দিয়ে।  সঙ্গে একটা ক্যালেন্ডার।  বৈশাখ থেকে চৈত্রের দিন গুলো জুলজুল করে চেয়ে আছে যেখানে ভাল থাকার নিবিড় প্রত্যাশায়।  দরবেশ , সন্দেশ , রাজভোগ ও চাই ? আচ্ছা হোক , কোল্ড ড্রিঙ্কস ও নিন।  কিন্তু ওই খাতাটা খুলুন। নতুন করে। প্রথম পাতায় একটা লম্বা লাইন টানুন , যার একদিকে আয় আর অন্যদিকে ব্যয়।  আয়ের দিকে বড় বড় অক্ষরে লিখুন “মনুষ্যত্ব “. লিখবেন ? দেখাই  যাক না চেষ্টা করে ? নতুন ভাবে  ? আজ , পয়লা বৈশাখে ? 

Friday, April 6, 2018

চিঠি

বেকার বকবক #২১


তোমাকে চিঠি লিখিনি কোনদিন।  লেখার প্রয়োজন হয়নি।  প্রয়োজন হলেও হয়ত লেখা যেত না । ব্রিজের ওপর দিয়ে গাড়ি চালাতে চালাতে হঠাৎ মনে পড়ল তোমার কথা আজ ।  মাইলের পর মাইল লম্বা একটা ব্রিজ।  রাতের অন্ধকারে খুব কিছু একটা দেখা যাচ্ছিল না , রাস্তাটুকু ছাড়া।  দিনের বেলায় কতবার গেছি এই রাস্তায়।  কিন্তু আজ রাতে কেন জানিনা তুমি এলে , এই পথে, আমার সাথে।  অফিস থেকে বেরিয়ে যখন পার্কিং লট-এ হাঁটছি , তখন ঝুপ ঝুপ করে নামছে অন্ধকার।  সার বেঁধে গাড়িগুলো দাঁড়িয়ে  আছে , মনমরা। গোল হয়ে উড়তে উড়তে কতগুলো অচেনা পাখি আকাশে শূন্য এঁকে দিয়ে যাচ্ছে লালচে কালো দিনশেষের আলোয়। ওই শূন্যের মধ্যে কি তুমি ছিলে ? তুমি কি ছিলে ওই শূন্যতায় ? চলে যাওয়া আলোর পথে ? তবে কেন আজ তুমি এইভাবে  … কি জানি , জানি না। ব্রিজের ওপর থেকে  দূরে , অনেকটা দূরে ঝাপসা দেখাচ্ছে ওপারটাকে।  ব্রিজ পেরোলেই পৌঁছে যাব যে প্রান্তে।  স্পষ্ট কিছু তো দেখতে পাচ্ছি না।  শুধু কতগুলো আলোর বিন্দু।  ওপারে থমকে  থাকা কতগুলো বাড়ি , হয়ত রাস্তার আলো , ব্যস্ত জনবসতি , মিটমিট করে জ্বলছে একটা শহর।  আলোর বিন্দু গুলো জলের ওপর এঁকে দিয়ে যাচ্ছে একটা স্কেচ।  আর জলে ভাসতে ভাসতে স্কেচটা আমার কাছে আসছে , আরও কাছে। কাঁপা কাঁপা জলছবি  তে আমি দেখতে পাচ্ছি তোমায়।  

স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি লাইব্রেরীর মাঠ , গঙ্গার ঘাটে ভিড় করে কত লোকজন , সাঁ সাঁ করে চলে যাওয়া তিন নম্বর বাস , জিটি রোড। তিনটে ছেলে গঙ্গার ঘাটে জলে পা ডুবিয়ে বসে তর্ক করছে  সুনীল, শক্তি না অন্য্ কেউ ।  এক ফুচকাওয়ালা কিছুতেই ফাউ দেবে না , তাই নিয়ে রক্তচক্ষু একজন। সাইকেল চালিয়ে দুই বন্ধু পাশাপাশি তুমুল আড্ডা দিতে দিতে ফিরছে বাড়ি।  রিক্সার প্যাঁক প্যাঁক , বাইক , সাদা Amabassador. গলির মুখটা থমকে আছে , এগোচ্ছে না কিছুই।  রাস্তায় বসে আপেল , আঙুর , কমলালেবু বিক্রি করছে গোবিন্দদা , আর এক ভিখারী জুলজুল চোখে দেখছে।  এই সব , এই সব আমার চোখের সামনে ভেসে যাচ্ছে time lapse video র মতো ওই জলে।  ওই তো যতীন বাবু হনহন করে হেঁটে যাচ্ছেন , ট্রেন ধরার তাড়া।  সবার বাড়িতে রেডিওয় একসাথে সাতটা পঁয়ত্রিশের রবীন্দ্রসঙ্গীত, গাইছেন সুবিনয় রায়।  কলতলায় হৈচৈ , আপিসের ভাতের গন্ধ , ব্যস্ত দিন সেজে উঠছে আস্তে আস্তে। মাথা নীচু করে হেঁটে চলে গেল একটা মেয়ে, প্রাইভেট টিউশনে। ভোঁ ভোঁ করে সাইরেন বাজিয়ে ছুটে  গেল galloping train টা যে station ছাড়িয়ে  , তার নাম উত্তরপাড়া।  মফঃস্বল শহর , আমার শহর।  আর এইসবের মধ্যে তুমি।  আমি দেখছি তোমায়।  কতদিন পর।  কতদিন পর তুমি সব পাতা উল্টে উল্টে আমাকে দেখাচ্ছো সব কিছু।  

Thursday, March 22, 2018

Mrs Patterson


বেকার বকবক #২০


দোতলা বাড়ি।  তিনটে  বেডরুম।  লাল ইঁট  দিয়ে গাঁথা বাড়িটাকে বাইরে থেকে দেখলে কোন ঐতিহাসিক বাড়ি বলে মনে হয়। আশপাশের সব বাড়ি গুলোও একইরকম দেখতে।  ত্রিভুজের আকারে উঠে গেছে তাদের ছাদ।  জানলা দরজা সাদা রঙের।  সাদা পর্দা লাগানো সব জানলায়।  রাস্তার ধারে সার বেঁধে park করা গাড়ি। কোথাও কোন শব্দ নেই , দূর থেকে মাঝে মাঝে দ্রুতগতিতে চলে যাওয়া গাড়ির শব্দ ছাড়া।  কৃষ্ণা আর চন্দ্রা দরজা খুলে আমাকে ভেতরে নিয়ে গিয়ে বলল , এই তোমার নতুন বাসা।  ভক করে সম্বর রসমের গন্ধ নাকে।  Heathrow airport এ নেমে প্রথমবার British accent শুনে মনে হচ্ছিল ইংরিজি ভাষাটা কোনদিন শুনিনি।  অচেনা দেশ , অচেনা মানুষজন, অচেনা সবকিছু ।  উনিশশো নব্বুইয়ের মাঝামাঝি।  প্রথমবার বিদেশ।  সম্বরের গন্ধে তাই London পৌঁছে প্রথম আমার  আমি চিনি গো চিনি তোমারে অনুভূতি।  London ঠিক না।  London থেকে একটু দূরে। ছোট্ট শহর।  নাম High Brooms । এই দুই দক্ষিণী ছেলে এ বাড়িতেই থাকে।  এটা আমাদের কোম্পানীর গেস্ট হাউস।  Project এর কাজে কেউ আসলে এখানেই থাকার ব্যবস্থা।  সুতরাং আমার জিনিসপত্র নিয়ে দোতলার কোণায় একটা ছোট্ট ঘরে ঢুকে পড়লাম।  এটাই আমার ঘর।  একটা single bed । ছোট একটা টেবিল।  জামাকাপড় রাখার একটা ছোট জায়গা , closet তার নাম।  ছাদের ওই ত্রিভুজের একটা দিক এ ঘরের একটা দেওয়াল।  সেই দেওয়ালে একটা ছোট্ট জানলা।  সে জানলায় দাঁড়িয়ে একটু আকাশ দেখা যায়।  আর দেখা যায় উল্টোদিকের কতগুলো একইরকমের বাড়ি আর রাস্তার কিছুটা।  মাস তিনেক আমাকে এখানেই আস্তানা গাঁড়তে হবে।

কাছেই একটা Indian restaurant এ রাতে খেতে গিয়ে কৃষ্ণা আর চন্দ্রা বলল ওদের Project এর মেয়াদ শেষ , তাই ওরা আর সপ্তাহ দুয়েক পর ফিরে যাবে দেশে।  দিন দুয়েকের মধ্যে বুঝে গেলাম নিয়ম কানুন।  সকাল সকাল হেঁটে High Brooms স্টেশন।  সেখান থেকে British Rail এ পাঁচ মিনিট Tunbridge Wells , যেখানে আমার অফিস।  আবার বিকেলে একইভাবে ফেরা।  হাঁটা পথেই grocery store । কিছু খাবার দাবার কিনে এনে নতুন চেনা microwave এর সাথে আলাপচারিতা।  দুসপ্তাহ পরে কৃষ্ণা চন্দ্রার ঘরগুলো খালি হয়ে গেল।  ভাবলাম একটা বড় ঘরে থাকি।  কিন্তু তখন আমার ওই খুপরি জানলার সাথে কিরকম  একটা সখ্যতা হয়ে গেছে।  ও ঘরেই থেকে গেলাম। সকাল সকাল অফিস যাই , সন্ধ্যেবেলা ফিরি।  রাস্তায় লোকজন খুব কম ।  আশপাশের বাড়ি গুলোতে কেউ থাকে বলে মনে হয় না। কাউকে দেখা যায় না।   তিনটে বাড়ি পরে একটা বাড়ির সামনে মাঝে মাঝে এক ভদ্রলোককে Lawn mow করতে দেখি।  একমাত্র Grocery store এ গেলে কিছু মানুষ দেখা যায়।  মাঝে মাঝে কিছু না লাগলেও ওখানে যাই।  তারপর বাড়ি ফিরে microwave , television , ঘুম।  ঘুম আসে না , রাত প্রায় দশটা অবধি সুর্য্যের আলো , তখন  জুন  মাস।  খুপরি জানলাটায় বসে আকাশ দেখি।  কোন কোনদিন চিঠি লিখি কাউকে , কলকাতায়।

Friday, March 16, 2018

হাতের মুঠোয় পৃথিবী

বেকার বকবক #১৯

পৃথিবী এখন আমার হাতের মুঠোয়। মুঠোয় আমার ভোর হয় , মুঠোয় সূর্যাস্ত।  মুঠোর মধ্যে আনন্দের ঢেউ , মুঠোয় মনখারাপের চোরা স্রোত। মুঠোর দিকে তাকিয়ে আমার খুশী থাকা , মুঠোয় নীরবতা। রাজ্যের বন্ধুরা বকবক করছে সারাদিন এই মুঠোয় ।   কেউ হয়তো ছুটিতে কোন Sea Beach এ  , ঢেউ আর ঢেউ।  কারো পেরিয়ে গেছে মাঝরাত একটা ছোট্ট দমবন্ধ করা flat এ. কাঠ ফাটা রোদের  ব্যাস্ত দিনে কেউ  ।  অফিসের কাজে নাজেহাল একজন। আর একজন খেতে দিচ্ছে ছোট্ট মেয়েকে।  হাজার হাজার মাইল দূরে সবাই , তবু এই মুঠোতেই। 

কখনও মন খারাপ  ? এই মুঠোতে  রশিদ খান, কিংবা দেবব্রত বিশ্বাস ।  কোনদিন একলা রাতে শ্রীজাতর কবিতা।  সময় কাটানোর জন্য কোন latest film কিংবা চটজলদি শিখে নেওয়া একটা নতুন চিকেন মন চুরির recipe. হঠাৎ খুঁজে পাওয়া কাউকে।  নতুন পরিচয়। হারিয়ে গেছি ? রাস্তা চিনে পৌঁছে যাওয়া গন্তব্যে এই মুঠোতেই । ভালবাসাবাসি ও এই মুঠোয়।  রাগ অভিমান দুঃখ ঝগড়াও।  হাতের মুঠোয় থমকে আছে পৃথিবী আমার ।

Wednesday, March 7, 2018

রঙ পেনসিল



বেকার বকবক #১৮


যা যেখানে থাকার কথা থাকে না।  থাকলেও সঙ্গে অন্য কেউ থাকে , অনভিপ্রেত কেউ।  এই ধরুন দুধে জল , চালে কাঁকড় , আটায় ভুষি , সর্ষের সাথে ভৌতিক কিছু মিশে পিশে তবে  তেল. এরকম আরও কত কি। দেশটা ভেজালে ভরে গেল বলে হাহুতাশ। “আমরা খেয়েছি খাঁটি জিনিস ! কি স্বাদ আহা ! তোরা কি বুঝবি খাঁটির মর্ম ” শুনে শুনে কান পচে যেত। আমাদের কিছু আসত যেত না।  কারন ভেজাল খেতে খেতে আমরা এত অভ্যস্ত যে খাঁটি কিছু খেয়ে ফেললেই পেট খারাপ। সুতরাং খাঁটি ভেজাল নিয়ে যাহা চাই তাহা পাইনা গোছের sentu আমাদের ছিল না। তবে ছিল বিদেশী জিনিসের মোহ। খিদিরপুরের চোরা মার্কেট থেকে আনা বিদেশী চকোলেট, Chewing Gum বা নতুন ধরনের কোন খেলনা। তপুর কাকা মাঝে মাঝে আমাদের এনে দিতেন।  সেই নিয়ে চলত খুব উত্তেজনা কদিন। একবার সেরকম এক বিদেশী চকোলেট থেকে বেরোল এক পোকা। Magnifying lens দিয়ে সেই পোকাকে অনেক নিরীক্ষন করেও তাকে foreigner বলে মনে হল না। শেষে তপুর ঠাকুমা বিধান দিলেন জাহাজে করে অতদূর থেকে আসার পথে কোন দুস্টু পোকা টুক করে ঢুকে পড়েছে। সেই চকোলেট শেষ অবধি খাওয়া হয়নি।

Thursday, March 1, 2018

ল্যাম্পপোস্ট



বেকার বকবক #১৭

গোলপোস্ট থেকে শুরু করে ফেসবুক পোস্ট জীবনে কম পোস্টে তো আর ধাক্কা খেলাম না কিন্তু আমাদের পাড়ার মোড়ের মরচে ধরা ল্যাম্পপোস্টের  ধাক্কা, আমি কি ভুলিতে পারি  ? গলির ভেতর তস্য গলিতে এক কোণে রোগা পিলপিলে  ঢ্যাঙা একটা ল্যাম্পপোস্ট।  একটাই।  একটার বেশী ধার্য্য ছিল না মফস্বলের ওই গলিতে।  বেশী আলোর দাবী তখন অন্যায্য।  রাতের অন্ধকারে ওই ল্যাম্পপোস্টই আমাদের একমাত্র আলোর দিশারী।  কিন্তু আলো জ্বলবে কি জ্বলবে না সেটা ভাগ্যের ব্যাপার।  সেই সময় সবকিছুই কেন্দ্রের চক্রান্ত।  তাই ল্যাম্পপোস্টের আলো না জ্বললে আমরা জানতাম কেন জ্বলছে না।  হ্যাপা তো অনেক।  মাঝে মাঝে bulb  কেটে যেত।  তখন Electricity office এ খবর দিতে হোত।  খবর দেওয়া মানে পাড়ার কোন ছেলে গিয়ে বলে আসত "কাকা bulb কেটে গেছে " . নিয়ম ছিল electricity office থেকে কেউ এসে সরেজমিনে তদন্ত করে দেখবে।  সরকারবাবু সাইকেলে করে আসতেন। সাইকেলের চেন পরে গেলে একটু দেরী হত ঠিকই কিন্তু আসতেন।  এসে উনি ল্যাম্পের দিকে তাকাতেন।  ওনার ছোট্ট  একটা নোটবুকে কিসব লিখতেন , তারপর চলে যেতেন। তার সপ্তাহ দুই পরে আরেকজন এসে একটা লম্বা লাঠি দিয়ে কিসব করে bulb বদলে যেতেন।  সেইদিন  পাড়ায় পূর্ণিমা।  কিন্তু অমাবস্যাটাই ছিল মোটামুটি   রোজনামচা।   এরকমই এক অমাবস্যার রাতে তীর বেগে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরার পথে খেলাম সেই ধাক্কা।   সাইকেল একটু আহত হল , আমার নাক দিয়ে  রক্ত পড়ল অল্প। তখন নতুন নতুন সাইকেল চালিয়ে বন্ধুদের বাড়ি আড্ডা দিতে যাওয়া শুরু করেছি। বাড়ি ঢুকে বললাম এই ধাক্কাটার জন্যই আমার বাড়ি ফিরতে এত দেরী।

Thursday, February 22, 2018

ফিটফাট




বেকার বকবক #১৬

মাঝে মাঝে এমন একেকটা ঘটনা ঘটে যে আমি কে , কেন, কোথায় এসব দার্শনিক ভাবনা চিন্তা আমাকে লাগাতার তাড়া করে বেড়ায়।  অথচ যখন হয়, হঠাৎ। কিছুর মধ্যে কিছু না, অকস্মাৎ , একদিন আচানক। এইতো বছর খানেক আগে এক মনোরম সন্ধ্যায় একটা পাৰ্টিতে যাব বলে তৈরী হচ্ছি।  তার মাস ছয়েক আগে কেনা একটা দামী jeans পরতে  গিয়ে দেখি কোমরে  আর আঁটছে না ।  কাছেই ছিলেন কাছের মানুষ।  চোখাচোখি হতেই আমি বললাম “ছোট হয়ে গেছে”. ব্যাস।  বিষ্ফারিত চোখে উনি বললেন “ছোট হয়ে গেছে ? নিজেকে দেখেছ একবার আয়নায় ?”. কি বিপদ বলুন।  কি করে বোঝাই জামাকাপড় ছোট হয়ে যাওয়ার সমস্যাটা আমার ছোটবেলা থেকেই আছে।  কয়েকমাস অন্তর অন্তর জামা প্যাণ্ট ছোট হয়ে গেলে আমার বাবা আমাকে পাঠাতেন “ফিটফাট টেলার্স “ -এ. সেখানে এক টাক মাথা ভদ্রলোক টুলে বসে ঢুলতেন ।  ওনাকে আমরা ফিটফাট কাকু বলে ডাকতাম।  সেই  ফিটফাট কাকু আমায় দেখে মুচকি  হেসে বলতেন “কি আবার ছোট হয়ে গেছে ? এদিকে আয় “ বলে একটা ফিতে দিয়ে আমার মাপ নিতেন।  এরকম কয়েক বার হওয়ার পর বাবার নির্দেশে দু সাইজ বড় জামা প্যাণ্ট বানাতে শুরু করলেন।  সেই ঢলা পোশাক পরে কেটে গেল আমার শৈশব কৈশোর।  History repeats itself তাই সেই সমস্যা আবার ফিরে এসেছে।  কিন্তু এই তত্ত্ব কাউকে বোঝানো , তাও আবার আজকের দিনে ? ঝগড়া হল , আরও ঝগড়া  হল।  বাড়ন্ত বাচ্চা বলে আমায় অপমান করার পর বোঝানোর  চেষ্টা করলাম মানুষ মাত্রেই grow করে ,সেটাই কাম্য , শুধু একটা সময়ের পর growth টা দৈর্ঘ্যে না হয়ে প্রস্থে হয়।  পৃথিবীর ইতিহাসে দাম্পত্য কলহে কোনদিন কোন পুরুষ জেতে নি , সুতরাং একদিন সকালে আমি আয়নার সামনে দাঁড়ালাম।  

Tuesday, February 13, 2018

Valentine's Day




বেকার বকবক #১৫


 "এই Teddy টা নিয়ে যান  কাকু "

আশির দশকের গোড়ায় "পাড়ার মেয়েদের পাড়ার বৌ করতে হবে " আন্দোলনের অন্যতম কর্নধার কমরেড পরমেশ মিত্তির  দোকানদারের কথায় একটু হোঁচট খেলেন।  তারপর একবার মাথা চুলকে বললেন " না না ভালুক টালুক দিয়ে  কি করবে , তুই বরং একটা টক ঝাল মিষ্টি চানাচুর দিয়ে দে " . চানাচুর শুনে দোকানদার ছেলেটা কিরকম ভাবে একটা তাকালো।  গতবছর বেশ রোমান্টিক হবে ভেবে তিরিশ বছর আগে সেই প্রথম লুকিয়ে  দেখা করার  দিন কিনে দেওয়া চাটনি  লজেন্স নিয়ে বাড়ি ঢোকার পর গিন্নির মুখটা মনে পরে গেল পরমেশের ।  আন্দোলন ভেস্তে গেছিল নানা কারনে।  শেষমেষ বেপাড়ার মেয়ে পরমার  সাথে প্রেম করে বিয়ে। সুখের সংসার অনেকদিনের।  কিন্তু recently এক নতুন সমস্যা এসেছে পরমেশ মিত্তিরের জীবনে -  Valentine's Day. এক কালে নিজেকে খুব প্রগতিশীল প্রেমিক ভাবলেও আজকাল ঠিক তাল রাখা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে মনে হয় মাঝে মাঝে।  পেয়ারের গিন্নি কি করে এইদিনটায় Valentine হয়ে যায় আর কবে থেকে হল মাথায় ঢোকে না।  পাড়ায় পাড়ায়  প্যান্ডেল খাটিয়ে মাইক বাজিয়ে হৈহৈ ব্যাপার।  আবাসনের সবাই উত্তেজিত এই এক দিন নিয়ে।  Valentine's Day তে গিন্নিকে কি gift দিলেন  তাই নিয়ে সবার মুখে প্রশ্ন চিহ্ন।  সেই tension-এ আপিস থেকে ফেরার পথে কি কিনি কি কিনি করে  দোকানে আসা।  পরমেশ কে আমতা আমতা করতে দেখে ছেলেটা বলল " Valentine's Day-র জন্য বললেন  তো  ? Teddy , chocolate আর ফুল দিতে হবে , ওসব চানাচুর ফানাচুর এ হবে না " .

Tuesday, February 6, 2018

চোর





বেকার বকবক #১৪



ছোটবেলায় তপুদের বাড়িতে একবার চোর এসেছিল। গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা কিছু নয়  , কারণ চোর তো হামেশাই আসত , চুরি হোত। ছিঁচকে চোর ঘটি বাটি  নিয়ে যেত , সে আর এমন কি বড় ঘটনা।  কিন্তু ওদের বাড়িতে চোরটা ধরা পরতে পরতে পরে নি।  তপু চোখ গোল গোল করে রোমহর্ষক সেই কাহিনী আমাদের বলতো ।  তপু আর ওর ছোটকাকা যে ঘরে ঘুমোচ্ছিল সেই ঘরে চোরটা জানলার শিক ভেঙে ঢুকেছিল।  ঢুকে দামী জিনিসপত্র খুঁজতে খুঁজতে একটু দেরী করে ফেলেছিল।  তপুর কাকার ঘুম ভেঙে যায়।  ঘরের মধ্যে কোন আগন্তুকের উপস্থিতি টের পেয়ে উনি চোর চোর বলে চিৎকার করে মশারী থেকে বেরোতে বেরোতে চোর দরজা খুলে পালানোর চেষ্টা করে। তপুর কাকা স্ট্রাইকারে খেলতেন।  উনি ক্ষিপ্র গতিতে গিয়ে চোরটাকে প্রায় ধরে ফেলেছিলেন।  কিন্তু সমস্যা হল তখনকার দিনে সর্ষের তেল খুব সস্তা ছিল।  চোরটা চপচপ করে সর্ষের তেল মেখে এসেছিল । আর পরনে শুধু গামছা।  তপুর কাকা প্রায় ধরে ফেলেছিলেন কিন্তু সর্ষের তেলে পিছলে গিয়ে চোরটা পালিয়ে যায়।  ধস্তাধস্তিতে তপুর কাকার হাতে থেকে যায় চোরের গামছা।  কিছুই নিতে পারেনি চোরটা।  কিন্তু ঘটনাটা পাড়ায় বেশ হৈচৈ ফেলে দিয়েছিল। সবাই ভিড় করে চোরের ফেলে যাওয়া গামছা দেখতে গেছিল।  চাকদা থেকে তপুর  জ্যেঠু এসেছিলেন খুব চিন্তিত হয়ে. চোরের পড়নের গামছাটা দেখে উনি নাকি বীতশ্রদ্ধ মুখে বলেছিলেন “নিৰ্লজ্জ চোর কোথাকার” .

কেউ একটা বলেছিল এরকম অঘটন, একটা পুজো দেওয়া দরকার।  সে প্ৰস্তাৱ তপুর নাস্তিক বাবা, জ্যাঠা নাকচ করে দিয়েছিলেন।  বলেছিলেন defense party করতে হবে।  সে defense party  হয়েছিল।  রাত বিরেতে whistle বাজিয়ে পাড়ার সব লোকের পিলে চমকে তারা সবসময় যে চোর তাড়াতে পেরেছিল বলা যাবে না।  তবে party জমজমাট চলেছিল অনেকদিন। 

Wednesday, January 31, 2018

আশার গান , যাওয়ার মগ

Image Courtesey pixabay.com


বেকার বকবক # ১৩

শ্রাবনের ধারার মতো তখন H1B land করছে Silicon Valley তে।  আমি এসেছি কিছুদিন আগে।  তাই আমার ওপর দায়িত্ব পড়তো আমার company র যারা নতুন আসছে তাদের airport এ receive করতে যাওয়ার।  বিশেষত বাঙালী হলে।  সেই শনিবার আসছিলেন নিতাইদা।  Office থেকে বলেছিল NK , অর্থাৎ নিতাই কুমার।  San Francisco এয়ারপোর্ট এ গিয়ে অপেক্ষা করছি ,সঙ্গে আমার বন্ধু কবীর ।  নাম জানি , কিরকম দেখতে জানি না, একটা ছবি যদিও দেখেছিলাম তবে তার থেকে একটা ক্ষীণ অনুমান করা যায় মাত্র ।  কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পর suit tie পরা এক ভদ্রলোক যেভাবে গটমট করে হেঁটে বেরোলেন আমাদের মনে হল এ নিশ্চয়ই Mr Nitai।  কবীর  বলল “মেরেছে , আমেরিকা আসছে ভেবে Suit Tie চাপিয়েছে “ . আমাদের অনুমান ভুল হয়নি।  উনিই নিতাইদা।

গাড়িতে suitcase তুলে আমরা start করেছি।  নিতাই দা বললেন “একটা মগ কিনতে হবে “ . মগ ? আমেরিকা পৌঁছে Suit Tie পরা একটা লোকের প্রথম চাহিদা মগ ? আমার মাথায়  কিঞ্চিৎ কি জানি কি হয়।  “কি মগ Mr Nitai ? “ আমি জিজ্ঞেস করলাম।  “আরে , যাওয়ার মগ “ , নিতাইদার উত্তর।  যে হোটেলে ওনার থাকার ব্যবস্থা সেখানে পৌঁছে  কিছুক্ষন কথা বলে বুঝলাম ভদ্রলোক Toilet Tissue তে বিশ্বাস করেন না। সম্পূর্ণ Organic পথেই উনি চলতে চান।  তারপর Target, Walmart আর কিছু ছোট খাটো দোকানে মগান্বেষনে গেছিলাম আমরা।  কোন মগই পছন্দ হয় না। কোনটাই নাকি ঠিকঠাক ঢালার মতো shape নয়।  Finally “এটা দিয়েই চেষ্টা করে দেখি “ বলে কিনেছিলেন একটা মগ।  ব্যবহার করে আত্মার তৃপ্তি হয়েছিল কিনা আর জানতে চাইনি।

Tuesday, January 30, 2018

"ময়ূরাক্ষী" - A Review



অতনু ঘোষের কাজের সাথে আমার প্রথম পরিচয় বেশ কয়েক বছর আগে ওঁর তৈরী কয়েকটা Telefilm দেখে।  "মেঘ বৃষ্টি রোদ ", "মিশ্ররাগ" বা "সুমিত্রা অনলাইনের" মতো টেলিফিল্ম গুলো দেখে মনে হয়েছিল বেশ অনেকদিন পর একজন বাঙালী ডিরেক্টর এলেন যিনি human relationship নির্ভর গল্প বেশ নিখুঁত ভাবে celluloid এ আঁকতে পারেন।  তারপর থেকে অতনুর  ছবি আমি কমবেশী follow করেছি।  পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি অতনু শুরু করেন "অংশুমানের ছবি " দিয়ে।  তারপর পর পর "তখন তেইশ" , "রূপকথা নয়" , "একফালি রোদ " , "Abby Sen " . কিন্তু কোন ছবিতেই টেলিফিল্মের সেই অতনুকে আর পাইনি।  অতনুর নতুন ছবি "ময়ুরাক্ষী " .  প্রত্যাশা ছিল অনেক ,  কিন্তু এবারেও সেই ছোট ছবির অতনুকে পেলাম না।  

ময়ূরাক্ষী নিয়ে অনেক review লেখা হয়েছে , অনেক কথা , অনেক interview , অনেক আলোচনা, অনেক promotion ।  সুতরাং কি বিষয় নিয়ে "ময়ূরাক্ষী " তা বোধহয় বলার দরকার নেই।  আর খুব কিছু বলার নেই in fact . Aging Parents আর আমাদের সমাজের ওপর globalization এর প্ৰভাৱ।  খুব পরিচিত বিষয়।   বিশেষ করে আমরা যারা দেশ ছেড়ে অনেক বছর, তাদের খুব কাছের বিষয়।  Chicago-বাসী আর্যনীল কলকাতা আসে তার অসুস্থ বাবা  সুশোভনকে দেখতে।  চুরাশি বছরের সুশোভন কিছুটা dementia আর neurological সমস্যা নিয়ে অসুস্থ।  এধরনের অসুস্থতা যেভাবে পায়ে পায়ে এগিয়ে যায় অবনতির দিকে তাই ঘটছে সুশোভনের।  অল্পকদিনের জন্য এসে বাবার কাছে থাকে আর্যনীল।  এই কটাদিনই ছবির সময়সীমা।

Tuesday, January 23, 2018

ওরে মন



Image Courtesy pixabay.com

                                                                                                                               
বেকার বকবক # ১২


আমি একটু পেরাইভেট মানুষ।  মানে মনের কৌটোয় ঢাকনা লাগিয়ে থাকতে ভালবাসি।  আমার মনের কথা কেউ চট করে বুঝে যাবে ভাবলে একটা কিন্তু কিন্তু ভাব হয়।  কোনসময় যদি মনে হয় কেউ আমাকে বুঝে ফেলছে তখন যথাসাধ্য চেষ্টা করি মনের মধ্যে একটা দমকা হাওয়া এনে সব পাতা গুলোকে ওলট পালট করে দেওয়ার, যাতে যতটুকু যা বুঝেছিল তা যেন গুলিয়ে যায়।  আমার মতো মানুষের পক্ষে আজকাল টিঁকে থাকা প্রায় দায়।  সারাক্ষণই মনে হয় কেউ না কেউ আমার মনের কথা বুঝে ফেলার চেষ্টা করছে।  কে বা কারা যেন সবসময় আতিপাতি করে খুঁজছে আমার মনের পাতায় লেখা formula গুলো আর তাই দিয়ে লম্বা লম্বা deduction করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।  এই ধরুন সেদিন দুপুরে ভাতঘুম দেওয়ার আগে Laptop এ আনন্দবাজার এ মহারাণীর গল্প পড়ছি হঠাৎ একজন এসে জিজ্ঞেস করল “আপনি কি SAT Score বাড়াতে চান ?”. এই বয়েসে SAT score ? মশা মারার মতো করে তাকে তাড়ালাম।  ও বাবা মুহূর্তের মধ্যে আরেকজন লাফিয়ে উঠে বলে “ তাহলে কি Mortgage rate কমাবেন ?”. লাগে তাকে না লাগে তুক।

Tuesday, January 16, 2018

ইতিহাস


Image Courtesy pixabay.com 



বেকার বকবক #১১

অনেক বছর আগে তারও অনেক অনেক বছর আগের একটা ঘটনা আমাকে খুব জ্বালিয়েছিল।  আমাকে একা নয় , আমার মতো অনেককে।  তখন ক্লাস টেন।  মাধ্যমিক পরীক্ষা এসে গেছে প্রায়।  কে একটা খবর নিয়ে এল এবার ইতিহাস পরীক্ষায় মুঘল  সাম্রাজ্যের পতনের কারণ  জানতে চাওয়া হবে।  ইতিহাস পড়তে আমার খুব একটা ভাল লাগত না তাই একটা প্রশ্ন common পরা খুব সৌভাগ্যের ব্যাপার।  সুতরাং স্কুলের নোট , ছাত্রবন্ধু , ইতিহাস বই ঘেঁটে মুঘল  সাম্রাজ্যের পতনের কারণগুলো list করলাম এবং দুলে দুলে সকাল বিকেল মুখস্থ করতে লাগলাম।  মুখস্থ প্রায় হয়ে এসেছে তখন আমার এক দিদি  জিজ্ঞেস করলো “কটা point পেয়েছিস ? “ . আমি দশটা কারণ  almost গড়গড় করে মুখস্থ বলে দিলাম।  শুনে সে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল 60% পাবি।  একটু চেপে ধরতে জানতে পারলাম ওই দশটা কারণ  নাকি সবাই জানে , সবাই লিখবে।  তাই ভাল নম্বর পেতে গেলে নাকি at least চোদ্দ পনেরটা কারণ  দর্শাতে হবে।  আমি পড়লাম ভীষণ ফ্যাসাদে।  আরও চার পাঁচটা কারণ  কোথায় পাব ? আমার কোন গৃহশিক্ষক ছিলেন না।  মা কে জিজ্ঞেস করলাম , মা বলল বাড়ির হাজারটা কাজ ফেলে রেখে মায়ের পক্ষ্যে তখন মুঘল  সাম্রাজ্যের পতনের কারণ  খোঁজা সম্ভব নয়।  পাড়ার রকে এক দাদা আড্ডা মারতো যে ইতিহাস অনার্স নিয়ে পড়ে তখন বেকার।  তাকে ধরলাম।  সে বলল “জয়কৃষ্ণ পাবলিক লাইব্রেরীতে চলে যা ওখানে পেয়ে যাবি ”।  লাইব্রেরি আমার বাড়ি থেকে প্রায় আধ ঘণ্টার হাঁটা।  সাইকেল নিয়ে GT Road এ যাওয়ার অনুমতি ছিল না , সুতরাং হাঁটা দিলাম। রিক্সা , সাইকেল, গাড়ি , লোকজন , রাস্তার ধারে দোকান, সবজি বাজার আর আমি হাঁটছি।  রাস্তার ধারে একটা সদ্য গজিয়ে ওঠা শনি মন্দিরে ঢং ঢং করে ঘণ্টা বাজিয়ে পুজো হচ্ছে , এক মোড়ে পার্টির মিটিঙে  সাম্রাজ্যবাদীদের কালো হাত নিয়ে কিসব বলা হচ্ছে, একটা রিকশা প্যাঁক প্যাঁক  করতে  করতে কানের পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেল বলতে বলতে আগামী শুক্রবার “ দীপক” সিনেমা হলে “meri AWAZ suno “ আসছে। এই সবকিছুর মধ্যে হোঁচট খেতে খেতে আমি চলেছি মুঘল  সাম্রাজ্যের পতনের কারণ খুঁজতে । যখন লাইব্রেরি তে পৌঁছোলাম তখন শুনলাম পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে library র সব কর্মীরা ধর্মঘট করেছেন ,আমাকে আরেকদিন যেতে হবে। খুব হতাশ হয়ে  বাড়ি ফিরে এলাম।

Thursday, January 11, 2018

“I Love You”

Image courtesy pixabay.com


বেকার বকবক # ১০


চিলেকোঠার ঘরে আমরা চার বন্ধু।  তখন বোধহয় ক্লাস এইট।  পরিস্থিতি ঘোরালো।  তপু স্কুলে একটি মেয়েকে “I love you” বলে ফেঁসে গেছে।  মানে মেয়েটি কথাটার মর্ম অনুধাবন না করে  Sir কে বলে দিয়েছে আর তার ফলে তপুর guardian call হয়েছে।  “কি দরকার  ছিল “I love you” বলার কে জানে, শুধু একটা চোখ মারতে পারতি” প্রবীরের বক্তব্য ।  অনির্বাণ এর অভিজ্ঞতা একটু বেশী কারন তার মাস দুয়েক আগেই ও বাড়িতে casually “Love” কথাটা বলে বাবার কাছে বেধড়ক মার খেয়েছিল।  ও বলল Sorry বলবি, বলবি আর কোনদিন বলব না ব্যাস বেশী মার খাবি না।  তপু ব্যার্থ প্রেমিকের মতো তাকিয়ে থাকল ।  আমি বললাম প্রমাণ কি আছে তুই বলেছিস ? কিন্তু সমস্যাটা হল কেউ প্রমাণ খুঁজছে না , এরকম খারাপ কথা কেউ কাউকে বলতে পারে ভাবা যায় না , সুতরাং guardian call।  এবার যদি তপুকে স্কুল থেকে rusticate করে দেয় কি হবে সেটাই আলোচ্য বিষয়।  

আলোচনা করে আমরা খুব একটা কিছু করতে পারিনি।  তপুর বাবা school এ গিয়ে খুব অপমানিত হয়েছিলেন।  বাড়ি এসে তপুকে বলেছিলেন “এই জন্য তোমাকে পয়সা খরচ করে ভাল স্কুলে পাঠাচ্ছি ? খারাপ খারাপ কথা শিখছ ? “ Sentence টা শেষ করে তপুকে এমন একটা চড় মেরেছিলেন যে তপু পরের ছমাস গালে হাত দিয়ে থাকত , কারন মেয়েরা ওই চড়ের দাগ দেখে হাসাহাসি করত। পরে তপুর বাবা আর আমাদের school এর Principal এর মধ্যে conversation টা exactly কি হয়েছিল তাই নিয়ে অনেক রসালো গপ্পো করেছি আমরা। জানা গিয়েছিল তপু আর জীবনে ওরকম খারাপ কথা উচ্চারণ করবে না এরকম একটা কিছু মুচলেকা দিয়ে তপুকে school থেকে rusticate হওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন ওর বাবা।  

Thursday, January 4, 2018

গরুর রচনা




বেকার বকবক # ৯


আমার বাংলা রচনা লেখার হাতেখড়ি গরুর রচনা দিয়ে।  গরু গৃহপালিত পশু , গরুর চারটে পা দুটো শিং একটা লেজ ইত্যাদি দিয়ে শুরু করে হাম্বা হাম্বা।  কতবার যে লিখেছি সে রচনা তার হিসাব নেই।  আর গরুর রচনা মুখস্থ করে পরীক্ষা দিতে গিয়ে অন্য্ কোন রচনা আসলেও গরুতে গিয়ে শেষ করেছি আমরা অনেকেই।  যেমন ধরুন বন্যার ওপর রচনা লিখতে বলা হল , বন্যার ভয়াবহতা নিয়ে দুচার কথা লিখে কয়েকটা গরুকে বন্যায় ভাসিয়ে দিন  , দিয়েই চারটে পা দুটো শিং আর লেজ পাকড়ে হাম্বা হাম্বার পথে চলে যান , full marks না হলেও পাতা ভরিয়ে দেওয়া গেল।  আমার এক বন্ধু বাংলা পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় রাস্তায় কোন গরু দেখলে খুব ভক্তিভরে প্রণাম করতো , তারপর পরীক্ষায় “পারমাণবিক অস্ত্র” থেকে “বিশ্ব খাদ্য সমস্যা” যে রচনাই লিখতে বলা হোক গরুকে টেনে এনে খুব তৃপ্তি সহকারে লিখতো। মোদ্দা কথা গরু আমাদের স্কুল জীবনে রচনা ক্লাসে মহান পরিত্রাতার ভূমিকা পালন করেছে।  

Readers Loved These Posts