বেকার বকবক # ৬
KG তে স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য তখন নতুন নতুন Oral পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আমার এক বন্ধুর বাবার সাথে আমাকে সেই কঠিন Oral পরীক্ষা দিতে পাঠিয়েছিলেন আমার বাবা মা। হয়ত নিজের চোখের সামনে ছেলের ধ্যারানো মেনে নিতে কষ্ট হবে ভেবেই। কিন্তু আমি অত্যন্ত সাফল্যের সাথে এক দানেই সেই পরীক্ষা উৎরে যাই। কারন পরীক্ষায় প্রশ্ন খুব সহজ এসেছিল। আমাকে প্রশ্ন করা হল “ তোমার কান কোথায় দেখাও তো ? “ আমি খুব তৎপরতার সাথে দু হাত দিয়ে আমার দুকান দেখিয়ে দিই। তাই দেখে পরীক্ষক তার পাশে বসা আরেকজনের দিকে প্রীত হেসে যেভাবে তাকালেন তার মানে , এ ছেলেটি পারবে। পরে বুঝেছি কি পারার কথা ওরা ভেবেছিলেন। আমি যে স্কুলে পড়তাম সেখানে কানের এক বিশাল ভূমিকা ছিল। কারন সারাক্ষণই কানধরে দাঁড়াও বা কানধরে ওঠবোস কর এই main instruction ই আমায় follow করতে হোত। উঁচু ক্লাসে ওঠার সাথে সাথে মূলত বানান ভুলের জন্যই বেশীরভাগ সময় কান কোথায় প্রশ্নটার উত্তর কাজে আসত। সুতরাং সারা স্কুল জীবন ও পরবর্তী জীবন বানান ঠিক লেখার টেনশনে কেটেছে আমার।
কিন্তু প্রায় বছর কুড়ি হল আমি আর বানান ভুল করি না. শুধু typo করি। স্কুল জীবনে বানান ভুল সংক্রান্ত যত কানমলা , কানধরে ওঠবোস , গোল্লা খাওয়া সবকিছু অবশেষে কাজে এসেছে ভেবে মনের মধ্যে একটা গভীর প্রশান্তি অনুভব করি আজকাল। আমার মতো বানান নিয়ে ল্যাজে গোবরে মানুষদের জন্য Typo এ শতাব্দীর সেরা আবিষ্কার। যা প্রাণে আসছে লিখে যাই আর কিছু গড়বড় হলেই বলি typo. এই ধরুন এই লেখাটার মধ্যে যদি কিছু চোখে পরে বুঝে নেবেন কি হয়েছে। বানান অবশ্যই জানি কিন্তু ওই typo হয়ে গেছে।
Typo শব্দটার মধ্যে যা বলতে চাই তা বলা হল না বা যা বলে ফেললাম সেটা বলতে চাইনি-র একটা বেদনা আছে । খুব কাজে আসে কারন আজকাল তো যা বলতে চাই , নির্ভেজাল সত্য , তা তো আর সবসময় বলা যায় না বা বললেও কেউ বুঝবে না। বা কখনও বলে ফেললেও তাকে কায়দা করে re-phrase করে পরীক্ষা পার । সুতরাং এই বেশ ভাল আছি , ভাল থাকব typo নিয়ে। Typo আছে , থাকুক। তবে ওই যে বললাম , বেদনা। ওটা কেন তাই নিয়ে প্রশ্ন করবেন না , তাহলে আবার typo করতে হবে।
Please Leave Your Feedback or Comment
🔻🔻🔻🔻🔻🔻🔻🔻🔻🔻🔻🔻
No comments:
Post a Comment