এই তো সেদিন#২
চোখটা একটু লেগে গেছিলো। জগাদার আর দোষ কি? সকাল থেকে একের পর এক ঝক্কি সামলে খাওয়া দাওয়ার পর দুপুর আড়াইটে নাগাদ খাটে একটু লম্বা হলে যা হয় আর কি !
ওয়ার্ক ফ্রম হোমে ঠিক টেম্পো নেই জগাদার। তাতে কি ? কাজ কি আর একটা ? সকালে উঠে প্রথমে কোন দেশে কত লোক ইনফেক্টেড, কত মানুষ মৃত , কোথায় কত মাস্ক লাগবে, কি কি ভাবে আহাম্মক ভাইরাসটা ছড়াতে পারে , কার্ভ ফ্ল্যাটেন করতে আর কতটা পথ বাকি , তার ওপর ডাও জোন্স কোথায় , ইকনমি কোন দিকে , কত মানুষ বেকার , ঠিক কোন স্টিমুলাসে সব কিছু আবার নাচন কোদনে ফিরে আসবে এসব এনালিসিস করা সহজ কথা ? তার ওপর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থেকে লাটভিয়ার প্রাইম মিনিস্টার , বুখারেস্টের মেয়র থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের ডি এম কে কি ভুল করলেন, তাদের ঠিক কি স্ট্রাটেজি নেওয়া উচিত ছিল তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করে হোয়াটসআপ-এর ঠেক গুলোতে সবাইকে আপডেট করে তারপর লাঞ্চ খাওয়ার ফুরসৎ। লুচি, ছোলার ডাল, কষা মাংসের সাথে CNN আর BBC. এর পরে তো একটু লম্বা হতেই হয়।
শুয়ে পা নাচাতে নাচাতে কত তাড়াতাড়ি একটা ভ্যাকসিন মার্কেটে আসবে আর অনলাইন গ্রোসারিতে কি কি অর্ডার করতে হবে ভাবতে ভাবতেই ব্যাপারটা হল। জাস্ট তন্দ্রা মতো। তন্দ্রা হাত ধরে জগাদাকে নিয়ে গেল আরও গভীরে । প্রথমে কোন এক সমুদ্রের তীরে। বীচ ভর্তি অনেক মানুষ । মনোরম চারপাশ। আর জগাদা হেঁটে চলেছে একা একা, জলে পা ভিজিয়ে। হঠাৎ ঢেউয়ের ভেতর থেকে কে যেন একজন ছুটে আসছে জগাদার দিকে। কাছাকাছি আসতেই একটু চেনা চেনা লাগল মুখটা। কিন্তু চেনা মুশকিল কারন লোকটার সারা মুখ রক্তে ভেসে যাচ্ছে। গুন্ডা মতো একটা লোক জগাদার পেছন থেকে এসে দুম দুম করে তিনটে গুলি করল আগের লোকটাকে। ব্যাস সব শেষ। বীচে অন্য সবাই দেখেও কিছু দেখল না। জগাদাও কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে লম্বা লম্বা পা ফেলে সমুদ্র পেড়িয়ে এক পাহাড়ি রাস্তায় গাড়ি চালাতে শুরু করল । মুশকো মতো একটা লোক প্যাসেঞ্জার সিটে। সবুজ পাইনের বন সরে সরে যাচ্ছে ডাইনে বাঁয়ে। গুলাম আলী সঙ্গ দিচ্ছেন গাড়ির সাউন্ড সিস্টেমে। হঠাৎ দূরে রাস্তার ওপর কি যেন একটা দেখা যাচ্ছে । মুশকো লোকটা জগাদাকে চোখের ইশারা করতেই জগাদা বুঝে গেল রাস্তায় মাইন পাতা আছে। গাড়ি ঘোরাতেই সে গাড়ি হেলিকপ্টার হয়ে আকাশে। উড়ে যেতে যেতে পাশের লোকটাকে জগাদা জিজ্ঞেস করল “ ভাই আপনাকে কোথায় দেখেছি বলুন তো ? “ . লোকটা মুচকি হেসে যেই বলেছে প্রাইমেও আছি নেটফ্লিক্সেও আছি অমনি এক ঝাঁক মৌমাছি হেলিকপ্টারের জানলায় বসে ভোঁ ভোঁ করে এমন হাসাহাসি শুরু করল যে জগাদা টাল সামলাতে না পেরে ধপাস করে ক্র্যাশ, একদম বিছানার ওপরে।
ধড়মড় করে উঠে বসল জগাদা। বাইরের আলো কি একটু কম ? ভোর হল না কি সন্ধ্যে ? গলা শুকিয়ে এসেছে । উঠে এক ঢোক জল খেয়ে মনে করার চেষ্টা করল “কোথায় আছি আমি “। মনে পড়ল না।
চোখে পড়ল একটা জানলা, বেডরুমের। জানলার সামনে এসে দাঁড়াল জগাদা । জানলা দিয়ে রাস্তা দেখা যায়। প্রতিবেশীদের বাড়ি, পরপর। সামনের বাড়ির দরজায় একজন মধ্যবয়সী মহিলা গ্রোসারি ডেলিভারি দিয়ে গেলেন । বাইরে একটা ঝড়ো হাওয়া। রাস্তায় আর কেউ নেই। কটা শুকনো পাতা হুড়মুড় করে দলবেঁধে রাস্তা পার হল হাওয়ার পিঠে চরে । পাতাগুলোর সঙ্গে একটা ডিসপোজেবল মাস্কও । একটু দূরে একটা বড় গাছ। গাছটা মাথা নাড়ছে জোরে জোরে। হঠাৎ চোখে পড়ল জগাদার বাড়ির পাঁচিলের ওপরেই বসে একটা পাখি। নীল আর কালোর মিশেল। পাখিটা কিরকম কনফিউসড। নিজের বাসা খুঁজে পাচ্ছে না ? নাকি ঝড়ে উড়ে গেছে ওর বাসা। খুব চেনা পাখিটা। জগাদা ভালো করে অনেকক্ষন দেখেও পাখিটার নামটা মনে করতে পারল না। জানলা দিয়ে ফ্যালফ্যাল করে শুধু তাকিয়েই রইল বাইরের দিকে । বাইরেটা একদম অচেনা।
ওয়ার্ক ফ্রম হোমে ঠিক টেম্পো নেই জগাদার। তাতে কি ? কাজ কি আর একটা ? সকালে উঠে প্রথমে কোন দেশে কত লোক ইনফেক্টেড, কত মানুষ মৃত , কোথায় কত মাস্ক লাগবে, কি কি ভাবে আহাম্মক ভাইরাসটা ছড়াতে পারে , কার্ভ ফ্ল্যাটেন করতে আর কতটা পথ বাকি , তার ওপর ডাও জোন্স কোথায় , ইকনমি কোন দিকে , কত মানুষ বেকার , ঠিক কোন স্টিমুলাসে সব কিছু আবার নাচন কোদনে ফিরে আসবে এসব এনালিসিস করা সহজ কথা ? তার ওপর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থেকে লাটভিয়ার প্রাইম মিনিস্টার , বুখারেস্টের মেয়র থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের ডি এম কে কি ভুল করলেন, তাদের ঠিক কি স্ট্রাটেজি নেওয়া উচিত ছিল তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করে হোয়াটসআপ-এর ঠেক গুলোতে সবাইকে আপডেট করে তারপর লাঞ্চ খাওয়ার ফুরসৎ। লুচি, ছোলার ডাল, কষা মাংসের সাথে CNN আর BBC. এর পরে তো একটু লম্বা হতেই হয়।
শুয়ে পা নাচাতে নাচাতে কত তাড়াতাড়ি একটা ভ্যাকসিন মার্কেটে আসবে আর অনলাইন গ্রোসারিতে কি কি অর্ডার করতে হবে ভাবতে ভাবতেই ব্যাপারটা হল। জাস্ট তন্দ্রা মতো। তন্দ্রা হাত ধরে জগাদাকে নিয়ে গেল আরও গভীরে । প্রথমে কোন এক সমুদ্রের তীরে। বীচ ভর্তি অনেক মানুষ । মনোরম চারপাশ। আর জগাদা হেঁটে চলেছে একা একা, জলে পা ভিজিয়ে। হঠাৎ ঢেউয়ের ভেতর থেকে কে যেন একজন ছুটে আসছে জগাদার দিকে। কাছাকাছি আসতেই একটু চেনা চেনা লাগল মুখটা। কিন্তু চেনা মুশকিল কারন লোকটার সারা মুখ রক্তে ভেসে যাচ্ছে। গুন্ডা মতো একটা লোক জগাদার পেছন থেকে এসে দুম দুম করে তিনটে গুলি করল আগের লোকটাকে। ব্যাস সব শেষ। বীচে অন্য সবাই দেখেও কিছু দেখল না। জগাদাও কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে লম্বা লম্বা পা ফেলে সমুদ্র পেড়িয়ে এক পাহাড়ি রাস্তায় গাড়ি চালাতে শুরু করল । মুশকো মতো একটা লোক প্যাসেঞ্জার সিটে। সবুজ পাইনের বন সরে সরে যাচ্ছে ডাইনে বাঁয়ে। গুলাম আলী সঙ্গ দিচ্ছেন গাড়ির সাউন্ড সিস্টেমে। হঠাৎ দূরে রাস্তার ওপর কি যেন একটা দেখা যাচ্ছে । মুশকো লোকটা জগাদাকে চোখের ইশারা করতেই জগাদা বুঝে গেল রাস্তায় মাইন পাতা আছে। গাড়ি ঘোরাতেই সে গাড়ি হেলিকপ্টার হয়ে আকাশে। উড়ে যেতে যেতে পাশের লোকটাকে জগাদা জিজ্ঞেস করল “ ভাই আপনাকে কোথায় দেখেছি বলুন তো ? “ . লোকটা মুচকি হেসে যেই বলেছে প্রাইমেও আছি নেটফ্লিক্সেও আছি অমনি এক ঝাঁক মৌমাছি হেলিকপ্টারের জানলায় বসে ভোঁ ভোঁ করে এমন হাসাহাসি শুরু করল যে জগাদা টাল সামলাতে না পেরে ধপাস করে ক্র্যাশ, একদম বিছানার ওপরে।
ধড়মড় করে উঠে বসল জগাদা। বাইরের আলো কি একটু কম ? ভোর হল না কি সন্ধ্যে ? গলা শুকিয়ে এসেছে । উঠে এক ঢোক জল খেয়ে মনে করার চেষ্টা করল “কোথায় আছি আমি “। মনে পড়ল না।
চোখে পড়ল একটা জানলা, বেডরুমের। জানলার সামনে এসে দাঁড়াল জগাদা । জানলা দিয়ে রাস্তা দেখা যায়। প্রতিবেশীদের বাড়ি, পরপর। সামনের বাড়ির দরজায় একজন মধ্যবয়সী মহিলা গ্রোসারি ডেলিভারি দিয়ে গেলেন । বাইরে একটা ঝড়ো হাওয়া। রাস্তায় আর কেউ নেই। কটা শুকনো পাতা হুড়মুড় করে দলবেঁধে রাস্তা পার হল হাওয়ার পিঠে চরে । পাতাগুলোর সঙ্গে একটা ডিসপোজেবল মাস্কও । একটু দূরে একটা বড় গাছ। গাছটা মাথা নাড়ছে জোরে জোরে। হঠাৎ চোখে পড়ল জগাদার বাড়ির পাঁচিলের ওপরেই বসে একটা পাখি। নীল আর কালোর মিশেল। পাখিটা কিরকম কনফিউসড। নিজের বাসা খুঁজে পাচ্ছে না ? নাকি ঝড়ে উড়ে গেছে ওর বাসা। খুব চেনা পাখিটা। জগাদা ভালো করে অনেকক্ষন দেখেও পাখিটার নামটা মনে করতে পারল না। জানলা দিয়ে ফ্যালফ্যাল করে শুধু তাকিয়েই রইল বাইরের দিকে । বাইরেটা একদম অচেনা।