অতনু ঘোষের কাজের সাথে আমার প্রথম পরিচয় বেশ কয়েক বছর আগে ওঁর তৈরী কয়েকটা Telefilm দেখে। "মেঘ বৃষ্টি রোদ ", "মিশ্ররাগ" বা "সুমিত্রা অনলাইনের" মতো টেলিফিল্ম গুলো দেখে মনে হয়েছিল বেশ অনেকদিন পর একজন বাঙালী ডিরেক্টর এলেন যিনি human relationship নির্ভর গল্প বেশ নিখুঁত ভাবে celluloid এ আঁকতে পারেন। তারপর থেকে অতনুর ছবি আমি কমবেশী follow করেছি। পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি অতনু শুরু করেন "অংশুমানের ছবি " দিয়ে। তারপর পর পর "তখন তেইশ" , "রূপকথা নয়" , "একফালি রোদ " , "Abby Sen " . কিন্তু কোন ছবিতেই টেলিফিল্মের সেই অতনুকে আর পাইনি। অতনুর নতুন ছবি "ময়ুরাক্ষী " . প্রত্যাশা ছিল অনেক , কিন্তু এবারেও সেই ছোট ছবির অতনুকে পেলাম না।
ময়ূরাক্ষী নিয়ে অনেক review লেখা হয়েছে , অনেক কথা , অনেক interview , অনেক আলোচনা, অনেক promotion । সুতরাং কি বিষয় নিয়ে "ময়ূরাক্ষী " তা বোধহয় বলার দরকার নেই। আর খুব কিছু বলার নেই in fact . Aging Parents আর আমাদের সমাজের ওপর globalization এর প্ৰভাৱ। খুব পরিচিত বিষয়। বিশেষ করে আমরা যারা দেশ ছেড়ে অনেক বছর, তাদের খুব কাছের বিষয়। Chicago-বাসী আর্যনীল কলকাতা আসে তার অসুস্থ বাবা সুশোভনকে দেখতে। চুরাশি বছরের সুশোভন কিছুটা dementia আর neurological সমস্যা নিয়ে অসুস্থ। এধরনের অসুস্থতা যেভাবে পায়ে পায়ে এগিয়ে যায় অবনতির দিকে তাই ঘটছে সুশোভনের। অল্পকদিনের জন্য এসে বাবার কাছে থাকে আর্যনীল। এই কটাদিনই ছবির সময়সীমা।
ছবিটা ঠিক দানা বাঁধল না। ছবির গল্প কিছু নেই as such . গল্প থাকতেই হবে এমন কোন কথা নেই। কিন্তু পুরো ঘটনাপ্রবাহ মোটামুটি এক জায়গাতেই থেমে থাকল। কোন ওঠা পড়া না থাকায় বেশ ঢিমে গতির ও static . ছবির মূল বক্তব্য intermission এর আগেই বলা হয়ে গেছে। Intermission এর পরও ছবি শেষ পর্যন্ত্য গড়ালো কিন্তু ছবি এগোল না। ঠিক আছে এগোল না মানলাম। যদি খুব গভীর emotion এর কথা বলাটাই উদ্দেশ্য তাহলে সেই emotion সেভাবে দর্শককে ছুঁতে পারল কই ? বয়স্ক বাবা মায়ের অসুস্থতা আমাদের প্রতিনিয়ত ভাবায়। এ ছবিতে সেই ভাবনাটায় অধিকাংশ দর্শকই relate করতে পেরেছেন বা পারবেন। কিন্তু তারপর ? আর্যনীল চরিত্রটাকে কোন সময়ই মনে হয়নি সে বাবার চিকিৎসার জন্য , বাবাকে ভাল করে তোলার জন্য উদগ্রীব। সে ঠিক কি করতে চায় সেটা পরিস্কার নয়। হয়ত অতনু সেটাই দেখাতে চেয়েছেন। দেখাতে গিয়ে বাবা ও ছেলের মধ্যে সম্পর্কটা দানা বাঁধেনি। সেই জায়গাটা যদি আরও পোক্ত হোত আমার মতে ছবিটা অনেক বেশী মনোগ্রাহী হতে পারত। আসলে আমি হয়ত সত্যি সত্যি অনেক অনেক দূরে থাকা ছেলেমেয়েদের তাদের বাবা মায়ের সম্পর্কে ভাবনা চিন্তা কিভাবে কাজ করে তাই নিয়ে ভাবছি। আর এটা অভিজ্ঞতার ব্যাপার। যে সে অভিজ্ঞতাটা নিজে সঞ্চয় করে নি তার পক্ষে এই অনুভূতিটা নিয়ে লেখা বা চিত্রায়িত করা খুব শক্ত কাজ। সেই শক্ত কাজটা অতনু যদি আরেকটু পরিশ্রম করে করার চেষ্টা করতেন ভাল লাগত। এছাড়াও হয়ত ঘটনার sequence গুলো ছবির গতিকে হালকা করে দিয়েছে। যেমন ধরুন হসপিটাল scene এর পর হঠাৎ করে আর্যনীল তার পুরোনো বান্ধবীর rooftop restaurant এ casual conversation এ , ধপাস। এইরকম আরও অনেক ধপাস , ছবিটাকে যেখানে পৌঁছনোর দরকার ছিল সেখানে পৌঁছতে দিল না। জানি না অতনু কি করতে চেয়েছিলেন। পরিচালক ও অনেকে কিছু কাব্যিক অনুষঙ্গ এনেছেন ছবিটা সম্বন্ধে। কোনভাবে কোথাও camera র কাজ বা visuals , dialogue বা setting এর কোথাও কোন কাব্যিক অনুষঙ্গ ব্যবহার করা হয়নি, at least consistently । একটা দুটো জায়গা ছাড়া। একটা scene এ যেখানে সুশোভন কে close up এ দেখানো হচ্ছে , তার dementia যেন একটু একটু করে বাড়ছে , lens একটা fuzzy effect আনছে সুশোভনের close up এ। আরেকবার সুশোভন বলছেন জীবনের অনেক সময় background music এর দরকার হয় , এবং তার সাথে camera অন্য দিকে বসে থাকা অল্পবয়সী couple কে ধরছে। আর কোন ভাবেই কোনো poetic dimension আমি ছবিটার মধ্যে পাই নি। সবটাই হয়ত আমার ভুল বোঝা , হতে পারে।
একটা কারনে , মাত্র একটা কারনে ছবিটা কে "must watch " বলব আমি। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয়। বাংলা film industry তে একমাত্র অভিনেতা যিনি প্রত্যেকটা চরিত্রের সাথে মিশে যেতে পারেন বা চরিত্রটাকে নিজে তৈরী করে দিতে পারেন। অনেক ভাল অভিনেতা আছেন বাংলা ছবির জগতে , কিন্তু খুব কম অভিনেতা আছেন যিনি নিজেকে সম্পূর্ণ ভাবে চরিত্রের সাথে আলাদা করতে পারেন। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আমার জানা একমাত্র অভিনেতা যিনি বারবার এটা করেন , করতে পারেন। শুধু সৌমিত্রবাবুর অভিনয় দেখার জন্য এই ছবিটা সবার দেখা উচিত। এবং যে ভাবে উনি সুশোভনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তাতেই ছবিটা average থেকে ভাল হয়ে উঠেছে। প্রসেনজিৎ , ইন্দ্রানী হালদার , সুদীপ্তা তাদের মতোই অভিনয় করেছেন। এরা সবাই নামী অভিনেতা।
Camera , music বা অন্য technical ব্যাপার নিয়ে উল্লেখযোগ্য কিছু বলার নেই। ছবি হিসেবে অসাধারন তকমাটা লাগাতে পারলাম না। শুধু সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অসাধারন। অতনুর কাজের একটা বড় গুণ সূক্ষতা , বা subtlety . সেটা পুরোমাত্রায় ছবিতে ছিল। কিন্তু বাকিসব কিরকম ছাড়া ছাড়া রয়ে গেল। আমার expectation অতনুর কাছে অনেক বেশী , সেটা পেলাম না। তবু ময়ূরাক্ষী কে average ছবির থেকে ওপরেই রাখব।
ছবিটা ঠিক দানা বাঁধল না। ছবির গল্প কিছু নেই as such . গল্প থাকতেই হবে এমন কোন কথা নেই। কিন্তু পুরো ঘটনাপ্রবাহ মোটামুটি এক জায়গাতেই থেমে থাকল। কোন ওঠা পড়া না থাকায় বেশ ঢিমে গতির ও static . ছবির মূল বক্তব্য intermission এর আগেই বলা হয়ে গেছে। Intermission এর পরও ছবি শেষ পর্যন্ত্য গড়ালো কিন্তু ছবি এগোল না। ঠিক আছে এগোল না মানলাম। যদি খুব গভীর emotion এর কথা বলাটাই উদ্দেশ্য তাহলে সেই emotion সেভাবে দর্শককে ছুঁতে পারল কই ? বয়স্ক বাবা মায়ের অসুস্থতা আমাদের প্রতিনিয়ত ভাবায়। এ ছবিতে সেই ভাবনাটায় অধিকাংশ দর্শকই relate করতে পেরেছেন বা পারবেন। কিন্তু তারপর ? আর্যনীল চরিত্রটাকে কোন সময়ই মনে হয়নি সে বাবার চিকিৎসার জন্য , বাবাকে ভাল করে তোলার জন্য উদগ্রীব। সে ঠিক কি করতে চায় সেটা পরিস্কার নয়। হয়ত অতনু সেটাই দেখাতে চেয়েছেন। দেখাতে গিয়ে বাবা ও ছেলের মধ্যে সম্পর্কটা দানা বাঁধেনি। সেই জায়গাটা যদি আরও পোক্ত হোত আমার মতে ছবিটা অনেক বেশী মনোগ্রাহী হতে পারত। আসলে আমি হয়ত সত্যি সত্যি অনেক অনেক দূরে থাকা ছেলেমেয়েদের তাদের বাবা মায়ের সম্পর্কে ভাবনা চিন্তা কিভাবে কাজ করে তাই নিয়ে ভাবছি। আর এটা অভিজ্ঞতার ব্যাপার। যে সে অভিজ্ঞতাটা নিজে সঞ্চয় করে নি তার পক্ষে এই অনুভূতিটা নিয়ে লেখা বা চিত্রায়িত করা খুব শক্ত কাজ। সেই শক্ত কাজটা অতনু যদি আরেকটু পরিশ্রম করে করার চেষ্টা করতেন ভাল লাগত। এছাড়াও হয়ত ঘটনার sequence গুলো ছবির গতিকে হালকা করে দিয়েছে। যেমন ধরুন হসপিটাল scene এর পর হঠাৎ করে আর্যনীল তার পুরোনো বান্ধবীর rooftop restaurant এ casual conversation এ , ধপাস। এইরকম আরও অনেক ধপাস , ছবিটাকে যেখানে পৌঁছনোর দরকার ছিল সেখানে পৌঁছতে দিল না। জানি না অতনু কি করতে চেয়েছিলেন। পরিচালক ও অনেকে কিছু কাব্যিক অনুষঙ্গ এনেছেন ছবিটা সম্বন্ধে। কোনভাবে কোথাও camera র কাজ বা visuals , dialogue বা setting এর কোথাও কোন কাব্যিক অনুষঙ্গ ব্যবহার করা হয়নি, at least consistently । একটা দুটো জায়গা ছাড়া। একটা scene এ যেখানে সুশোভন কে close up এ দেখানো হচ্ছে , তার dementia যেন একটু একটু করে বাড়ছে , lens একটা fuzzy effect আনছে সুশোভনের close up এ। আরেকবার সুশোভন বলছেন জীবনের অনেক সময় background music এর দরকার হয় , এবং তার সাথে camera অন্য দিকে বসে থাকা অল্পবয়সী couple কে ধরছে। আর কোন ভাবেই কোনো poetic dimension আমি ছবিটার মধ্যে পাই নি। সবটাই হয়ত আমার ভুল বোঝা , হতে পারে।
একটা কারনে , মাত্র একটা কারনে ছবিটা কে "must watch " বলব আমি। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয়। বাংলা film industry তে একমাত্র অভিনেতা যিনি প্রত্যেকটা চরিত্রের সাথে মিশে যেতে পারেন বা চরিত্রটাকে নিজে তৈরী করে দিতে পারেন। অনেক ভাল অভিনেতা আছেন বাংলা ছবির জগতে , কিন্তু খুব কম অভিনেতা আছেন যিনি নিজেকে সম্পূর্ণ ভাবে চরিত্রের সাথে আলাদা করতে পারেন। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আমার জানা একমাত্র অভিনেতা যিনি বারবার এটা করেন , করতে পারেন। শুধু সৌমিত্রবাবুর অভিনয় দেখার জন্য এই ছবিটা সবার দেখা উচিত। এবং যে ভাবে উনি সুশোভনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তাতেই ছবিটা average থেকে ভাল হয়ে উঠেছে। প্রসেনজিৎ , ইন্দ্রানী হালদার , সুদীপ্তা তাদের মতোই অভিনয় করেছেন। এরা সবাই নামী অভিনেতা।
Camera , music বা অন্য technical ব্যাপার নিয়ে উল্লেখযোগ্য কিছু বলার নেই। ছবি হিসেবে অসাধারন তকমাটা লাগাতে পারলাম না। শুধু সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অসাধারন। অতনুর কাজের একটা বড় গুণ সূক্ষতা , বা subtlety . সেটা পুরোমাত্রায় ছবিতে ছিল। কিন্তু বাকিসব কিরকম ছাড়া ছাড়া রয়ে গেল। আমার expectation অতনুর কাছে অনেক বেশী , সেটা পেলাম না। তবু ময়ূরাক্ষী কে average ছবির থেকে ওপরেই রাখব।